ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলায় মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সেবন করে আয়েশা মণি নামের চার বছরের এক শিশুর মৃত্যুর অভিযোগে মামলা করেছে তার বাবা। মামলায় অভিযুক্ত ফার্মেসির মালিক মোস্তাকিম মোল্লাকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার বিকেলে ফার্মেসিমালিককে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মোস্তাকিম মোল্লা জেলার সরাইল উপজেলার দক্ষিণ টিঘর গ্রামের বাসিন্দা। গত সোমবার দিবাগত রাতে সরাইল উপজেলা থেকে তাঁকে আটক করে পুলিশ।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহার ও নিহতের পরিবার সূত্রে জানা গেছে, জামালপুরের বকশীগঞ্জ উপজেলার খোকন মিয়া পরিবার নিয়ে আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামে বসবাস করেন। গতকাল সোমবার সকালে তাঁর মেয়ে আয়েশা অসুস্থ হয়ে পড়ে। স্বজনেরা উপজেলা সদরের পূর্ব বাজারে অবস্থিত আল-আমিন মেডিকেল সেন্টারে নিয়ে যান। সেখানে থাকা মোস্তাকিম বিল্লাহ শিশুকে দেখে একটি ব্যবস্থাপত্রে কিছু ওষুধ লিখে দেন। মোস্তাকিমের নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবারের লোকজন শিশু আয়েশা মণিকে ওষুধগুলো সেবন করান। ওষুধ খাওয়ার পর আয়েশার শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। স্বজনেরা আশুগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ওষুধগুলো দেখে ১০০ মিলি আপেলিন সিরাপ মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে বলে শিশুর পরিবারকে জানান। পরে লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে পাঠায়। মঙ্গলবার দুপুরে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করে। মঙ্গলবার সকালে শিশুটির বাবা খোকন মিয়া আল আমিন মেডিকেল সেন্টারের মালিক মোস্তাকিমকে আসামি করে আশুগঞ্জ থানায় একটি মামলা করেন। পুলিশ ওই মামলায় মোস্তাকিমকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আজ বিকেলে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা নূর-ই-ফারিয়া বলেন, দুপুরে ওই শিশুকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে মৃত অবস্থায় আনা হয়। বিষয়টি সন্দেহজনক মনে হওয়ায় পুলিশকে জানান। পুলিশ এসে তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে স্বজনেরা পুলিশকে কিছু ওষুধ দেখান। এর মধ্যে একটি ওষুধ মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল। ওই ওষুধ তাঁরা সাধারণত কাউকে খাওয়ার পরামর্শ দেন না। সেটি আয়ুর্বেদিক ওষুধ ছিল। তবে এই ওষুধে শিশুর মৃত্যু হওয়ার কথা নয়। বাকিটা পরীক্ষা-নিরীক্ষায় প্রমাণিত হবে।
আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বিল্লাল হোসেন বলেন, ফার্মেসি থেকে আনা আপেলিন নামের একটি সিরাপ মেয়াদোত্তীর্ণ ছিল বলে হাসপাতালের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন। যিনি ফার্মেসি থেকে ওষুধটি দিয়েছিলেন, তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদন পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।