ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার তিতাস নদের ওপর অবৈধভাবে নির্মিত চারটি বাঁধ ভেঙে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন। প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) যৌথভাবে এক্সকাভেটরের মাধ্যমে এসব বাঁধ গুঁড়িয়ে দিয়েছে, যার ফলে নদীর পানি চলাচল স্বাভাবিক হয়ে গেছে এবং মাটি কেটে লুট করার কাজ বন্ধ হয়েছে।আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) গাজালা পারভীন জানিয়েছেন, তাদের অভিযান মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছিল। বৃহস্পতিবার, পাউবো ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তার সহযোগিতায় তারা বাঁধগুলো ভেঙে ফেলেন, তবে রাতে সেগুলো আবার মাটি দিয়ে ভরাট করার চেষ্টা করা হয়। শুক্রবার আবার অভিযান চালিয়ে বাঁধগুলো সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস করা হয়। এর ফলে নদীর পানির প্রবাহ ফিরে আসে। অভিযানে মাটি লুটের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে এবং পুলিশ তাদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা করছে।
জানা গেছে, নদীর ওপর নির্মিত বাঁধগুলোর মধ্যে তিনটি বাঁধের মধ্যবর্তী অংশে পানি শুকিয়ে মাটি উত্তোলন করা হচ্ছিল, যা রাতের আঁধারে ট্রাকে করে বিক্রি করা হচ্ছিল। এই কার্যক্রমের কারণে পাশের কৃষকরা সেচের সমস্যায় পড়েছিলেন, এবং বাঁধের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হয়। স্থানীয় জসিম উদ্দিন ১২ মার্চ ইউএনও’র কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন, যেখানে মাটি কাটার কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের নাম উল্লেখ করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, আখাউড়া উপজেলার ধরখার ইউনিয়নে পূর্বে আওয়ামী লীগের আমলে দলের লোকজন প্রকাশ্যে কোটি কোটি টাকার মাটি ও বালু লুটে নিয়েছিল। যদিও সরকারের পতনের পর কিছুদিন এসব কাজ বন্ধ ছিল, তবে নতুন একটি প্রভাবশালী চক্র আবার বাঁধ দিয়ে মাটি লুট শুরু করেছে, যা তিতাস নদের স্বাভাবিক পানিপ্রবাহকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে।