নিজস্ব প্রতিবেদক, এস এম শাহনূর – আখাউড়া ডট কম
লোকমুখে হাজার বছর ধরে চলে আসা সরেস, তীক্ষ্ম শব্দমালাকে প্রবাদ বলা যেতে পারে। প্রবাদ প্রবচন মানবজীবনের দীর্ঘ অভিজ্ঞতার সংক্ষিপ্ত প্রকাশ। কাব্যের ধ্বনি বা ব্যঞ্জনাও প্রবাদের এক বিশেষ উপাদান। তাই, এক একটা প্রবাদকে কবিতার ঘনীভূত নির্যাস বা কাব্য কণিকা বলা যেতে পারে। প্রবাদ লোকসাহিত্যের একটি বিশেষ শাখা। প্রবাদে জীবন অভিজ্ঞতার নির্যাস থাকে, মানুষ তাই অর্থপূর্ণ এসব ছন্দ বা ভিন্নমাত্রার প্রকাশকে পছন্দ করে। খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতাব্দীতে মিশরের প্যাপিরাসের গল্পে প্রবাদের প্রয়োগ আছে। ভারতীয় বেদ-উপনিষদেও প্রবাদ আছে। বাংলা সাহিত্যের আদি নিদর্শন চর্যাপদে কয়েকটি প্রবাদ আছে। ‘আপনা মাসে হরিণা বৈরি’ প্রবাদটি চর্যাপদকর্তা ভুসুকু ব্যবহার করেন; তাঁর আবির্ভাবকাল এগারো শতক। চৌদ্দ শতকে বড়ু চন্ডীদাস শ্রীকৃষ্ণকীর্তনে এবং ষোল শতকে মুকুন্দরাম চন্ডীমঙ্গলে একই প্রবাদ ব্যবহার করেন। প্রবাদ, প্রবচন সংগ্রহের ইতিহাস দুইশত বছরের বেশি নয়। বাঙালিদের মধ্যে কানাইলাল ঘোষাল প্রথম বাংলা প্রবাদ সংগ্রহ করেন। এর পর বহু পন্ডিত বা ভাষাবিদ প্রবাদ সংগ্রহ ও গবেষণার কাজটি করেন। তার মধ্যে “মেয়েলী প্রবাদ” বিষয়ে সুকুমার সেনের সংকলনটি উল্লেখযোগ্য। একটি ভাষার প্রবাদ প্রবচন সে ভাষার একান্ত নিজস্ব সম্পদ। এই সম্পদ হস্তান্তর করা যায় না। অর্থাৎ এগুলোকে অনুবাদ করে অন্য ভাষায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। তাই অধিকাংশ ভাষাতাত্ত্বিকরা মনে করেন প্রবাদবাক্যের আলাদাভাবে শব্দ ও শব্দের অর্থ জেনে কোনো লাভ নেই। জানতে হবে পুরো বাক্যের মর্মার্থ। প্রবচনের বেলাতেও তাই। ‘নয়-ছয় করা’ একটি প্রবচন। নয়-ছয়কে আলাদা করে দেখলে কোনো অর্থ পাওয়া যাবে না।
প্রতিটি প্রবাদ বা প্রবচনের পেছনে রয়েছে নানা চিত্র, নানা কাহিনি বা গল্প। গল্প-কাহিনিগুলোর কোনোটা পৌরাণিক, কোনোটা ঐতিহাসিক, কোনোটা আবার আধুনিক। তবে বেশীর ভাগ বাংলা প্রবাদ ও প্রবচনের জন্ম বাঙালির মুখে মুখে।
প্রবাদ প্রবচনের কাজ জানা কথাকে একটু ঘুরিয়ে ভালো করে জানিয়ে দেওয়া। এর মধ্যে থাকে বিদ্রূপের ছোঁয়া, কৌতুক-কটাক্ষ, রঙ্গরস। প্রবাদ-প্রবচনের ব্যবহারে বাক্যে আসে বৈচিত্র্য, আসে ব্যঞ্জনা। প্রবাদ, বিশেষত প্রবচন অল্প কথায় অনেক কথা বলে। প্রবাদ প্রবচনের ‘প্র’ মানে বিশিষ্ট বা বিশেষ। ‘বদ্’ ধাতু নিষ্পন্ন ‘বাদ’ শব্দের পূর্বে ‘প্র’ উপসর্গ যুক্ত হয়ে প্রবাদ এবং ‘বচ্’ ধাতু নিষ্পন্ন ‘বচন’ শব্দের পূর্বে একই উপসর্গ যুক্ত হয়ে প্রবচন শব্দের উৎপত্তি হয়েছে। বদ্’ ও ‘বচ্’ উভয় ধাতুর অর্থ বলা। অন্যদিকে ‘বাদ’ ও ‘বচন’ শব্দদ্বয়ের আভিধানিক অর্থ কথা, কথন, বাক্য, উক্তি। প্রায়োগিক রূপে কিছু পার্থক্য ছাড়া ব্যুৎপত্তিগতভাবে প্রবাদ ও প্রবচনের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই।
তিতাস বিধৌত ব্রাহ্মণবাড়িয়া সঙ্গীত জগতে স্বর্ণাক্ষরে খচিত নাম। প্রাচীনকালেই এখানে লোক সাহিত্যের একটি পরিবেশ গড়ে উঠে। লোকসংস্কৃতি জারি গান, সারি গান, বাউল গান, কবি গান, যাত্রা গান, পালা গান, আধ্যাত্মিক গান, লোকসঙ্গীত, প্রবাদ প্রবচন, নজিরা, ধাঁধা, ছড়া, পুঁথি, কিচ্ছা-কাহিনী উল্লেখযোগ্য। বদলে গেছে তিতাসের জল! লোক কাহিনী, লোক সংগীত, ছড়া ও প্রবাদ-প্রবচনে এখনও এর কিছু কিছু নিদর্শন বর্তমান রয়েছে।
কখনো কখনো একই প্রবাদ কিছুটা পরিবর্তনসহ অঞ্চলভেদে একাধিক রূপেও প্রচলিত থাকে। ভৌগোলিক কারণে ময়মনসিংহ, টাঙ্গাইল, জামালপুর, শেরপুর, কিশোরগঞ্জ, নেত্রকোনা, নরসিংদী এবং ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কিছু অংশে প্রচলিত বুলি, বচন, কৌতুক, জোকস, প্রবাদবাক্যের মধ্যে বেশ কিছু মিল খুঁজে পাওয়া যায়। যেমন:
➤ধারায় নারা বাইরায়, চৌদ্দ পুরুষ তার পেন্দে দৌড়ায়
[পূর্বপুরুষদের কাজ/অভ্যাস এর প্রভাব পরবর্তীদের মধ্যে ও র্দীঘদিন বহাল থাকে।]
➤এক পয়সার ঋণের লাইগ্যা চান্দেরে খাইল
[চন্দ্র্রগ্রহনের বেলায় প্রযোজ্য, বলা হতো যে, সূর্য এক পয়সা ঋনের জন্য চন্দ্রকে গ্রাস করছে।]
➤শিলে পাডায় ঘষাঘষি, মইচের জীবন শেষ
➤নাইড়্যা মাথায় টিনটিন, এক পয়সার তেলের টিন
[ছোট ছেলের মেয়ের মাথা ন্যাড়া করলে, তার বন্ধুরা তাকে খ্যাপানো জন্য বলে থাকে]
➤আইলসার ঠাহুর [অত্যন্ত অলস], বলদ [বোকা অর্থে], লুহুনদরা [অলস], বাপের বেডা [সাহসী], চোপা করা [মুখে মুখে তর্ক করা] ইত্যাদি।
আমার সংগৃহীত ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার স্থানীয় লোকজ ভাষা থেকে জন্ম নেওয়া প্রবাদ প্রবচন এবং জেলার বহুল প্রচলিত প্রবাদ প্রবচন গুলো দুই ভাগে করে উপস্থাপন করলাম।
স্থানীয় লোকজ ভাষা থেকে জন্ম নেওয়া প্রবাদ প্রবচন:
অ
অইছে পুতে বাপ ডাকছেনা ঐব পুতে বাপ ডাকব।
আ।
আজাইরা থাইকা, গজাইরা গীত গা।
আমও গেছে, লগে ছালাও গেছে।
আক্কেল খাইছে মাডি, বাপে পুতে কান্দাকাটি।
আম থেইক্কা বাহল মিডা।
আম তিক্কা বড়া বড়।
আসমান দা আ পাতাল দা যা।
আঁকাড়া চাইলের দোকানদারী।
আমি অইলাম জামাইর ভাই, আমার পাতঅ পিডা নাই।
আফইট্টা কাঠুলের মুডি ডাংগর।
আইগ্গা হচেনা ফাইদ্দা গলাফানি।
আজাইরা লাঙ্গে ঘর-দুয়ার ভাঙ্গে।
আউসের তুলার দাম আশি টেহা।
আলের অ না জালের অ না।
আফনাত্তে বেগনা ভালা,দূরন দেশে ভিক্ষা ভালা।
আগে আডুরি ফান বাডুরি।
আপনা হরি সেলাম পানা মুইয়ারি ঠেং বাড়া।
আমার বিলাই আমারে ক মেও।
আরসি(নারকেলের খোল) দিয়া পানি খা,
আমার বিলাতি গেলাস টা গেল কই।
ই
ইছা ফুরাদা দেশ নিমন্তন।
ঈ
ঈমানে আমান, বেঈমানে দুনিয়া তামান।*
উ
উচিতে ভাত নাই রাস্তা দিয়া পথ নাই।
উচিত হরি ছালাম পানা, মইউরি দাইর পিরা বা।
ঊ
ঋ
এ
এক মাঘে শীত যায় না।
এক রাইতের উজাগরি সাত রাইত টানে।
এক গাছের বাহুল আরেক গাছে লাগে না।
এক ইড়ি আর এক ইড়িরে চিনে।
এক হাগুরি আরেক হাগুরিরে ক ইডা হেত কতদূর।
ঐ
ও
ওরাত দেখাইয়া ছয় মাস।
ঔ
ক
কাউয়ার বাসায় কুলি ছাও, জাত আনমান করে রাও।
কুত্তার কামুর আডুর নিচে।
কির্ফিনের ধন পিরফায় খায়।
কুত্তার ফেডে ঘি অজম অ না।
কুতায়া আগেনা ফেডঅ বুক লাগব দিক্কা।
কই আসমানের তারা, আর কই সুবাইন্নার মার আড়া।
কার বলে মরনকাল
কার বলে হাংগারফাল।
কোনবা আগুনের আগুন, আবার কাডল আলি ফুরা(পোড়া)।
খ
খেতের ইডা লাইলো তুইল্লা ভাংগে না, খেতুই ভাংগে।
খুতবার ছাডি নাই,বেইল্লার পুরাহি নাই।
খা ফেন দিয়া গপ্প মারে দই।
খাইত পানা ফহিন্নি ভাতেরে ক অন্ন।
খাইয়া বাইচ্চা কামাই জি বাঁচলে জামাই।
খাইয়ের লগে দেখা নাই দেয়র চৌদ্দ জন।
খাডাইশ্যা কুত্তার আগুইন্যা পাদ।*
আর পড়ুনঃ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণ: এক অমর কবির অনবদ্য কবিতা
গ
গাঙ ফার অইয়া সারলে মাইজ্জা চেডের বাল।
গরিবের বউ হগগলের অই ভাউজ।
গাঙের ঢেউ গাঙে অই মজে।
গাইয়ে বাছুর লনা গোয়াইল্যার পেরেশানি।*
ঘ
ঘরওলার ঘর না, বারওলার মুখামুখি।
ঘাট গুণে দারহিনা নাচে।
ঙ
চ
চমুখ চিন্না মুগের ডাইল।
চিনা বাউনের ফৈতা লাগে না।
চুল নাই বেডি চুলের লাইগ্যা কান্দে, কছু ফাতা দা।
চোরের মায়ের বড় গলা নিত খা দুধ কলা।
চোরের মার বড় গলা।
ছিরতারেনা মুরগির বাল, নাম রাখছে শেখ জালাল।
ছ
ছাগলের পাড়াই ধান পড়ে না।
ছাগল দিয়া আলচাষ করন যায়না।
ছিনালের আডারো জাত।
ছাল নাই কুত্তার বাঘার ডাক।
জ
জান চলে না বাড়ি বাউনবাইড়া।
জাতের ধারা খ্যাতের নাড়া।
জাতের মেয়ে কালো ভালো, নদীর পানি ঘোলাও ভালো।
ঝ
ঞ
ট
ঠ
ঠাডা পইড়া বগা মরছে, ফকিরের কেরামতি বাড়ছে।
ড
ডাইল দিয়া বাত হামু বিলাইরে আঙ্গুল দেহামু।
ডেগো নাই কোনো, ফুটকিত মাহে চুনু।
ঢ
ণ
ত
তুলা দুধে পুলা বাচে না।
থ
থাকতে ধরাইয়া খাও, বেইল থাকতে আইট্টা যাও।
থাকতে কাঁচি আরাইলে দা।
থাকতে পানা কুইআ কাঞ্জি, মল্লে পাইব ছিরি আংটি।
দ
দাওয়ের চেয়ে আছার মুডা।
দুড়া কাওয়ার মুখে হিন্দুইরা আম।
দুই ফাউয়ের অফুকার করতে নাই।
দুই টেহার উক্কানা, পিতলের কাড়া।
দুই দিনের বৈরাগী ভাতেরে ক অন্ন।
দেখ দেখ শিখ শিখ।
ধ
ন
নানী অইছে হাঙ্কির কানি।
না হাইবার কাডুল বাদুর মাসে পাহে।
না ফিন্দা ফিনছে কাফড়, গাইরে করে ফাফর ফাফর।
নাছ’ত না জানলে উডান বেহা।
নিজের নাই জাগা কুত্তা আনে ভাগা।
প
পঁচা শামুকে পা কাটা।
পরের হোটেলে খাইলে ছ মাসে বছর যা।
পাও জহন দুইডা,জেহানো হুসি হিয়ানো যা।
পাও জহন চাইরটা, ভাত কাফড় দিয়া জা।
পাও জহন ছডা, আব্বা আমারে লয়া জা।
ফ
ফাদো পড়লে বুঝবা কত ধানে কত চাইল।
ফুতের শোগ গরঅ লউয়ন যা, কিন্তু টেহার শোগ গরঅ লউয়ন যা না।
ফাহাল থেইক্কা ইডা বড়।
ফুটকিত গু থাকলে কত রঙ্গের জিলাপি বানান যা।
ফুতরা দেইক্কা ধর ধর জামাই আইলে জবাই কর।
ফহিন্নির ফুতের নাম বলে সুলতান খা।
ফইরা থাকলে ছেডের বাল দরলে কম্পানির মাল।
ফেন দা ভাত খা টাস্কি মারে দই।
ব
বাড়ির গরু গাডার ঘাস খায় না।
বাপ দাদার নাম নাই, চাঁন মোল্লার বিয়াই।
বুড়া কালে কুড়ার ডাক।
বইয়া হাইলে রাজার ধনও ফুরায় যায়।
বিয়া দিছ রঙ্গে, খাইব আমার ঠেঙ্গে।
বিহুবের বৌরে হগলতে ঐ ভাউজ ডাহে।
বাড়ি ওয়ালার বাড়ি না বাড় বাড়ি ওয়ালার বাড়ি।
বাড়ির গুরু ঘাডার ঘাস খাই না।
বালার সাথে চল্লে খা বাটার ফান, বুড়ার সাথে চল্লে কাডে দুই কান।
বাল ফালান্না মুনি চিড়া হাইবার জম।
বুদ্ধি থাকলে হওর বাইত হাঈট্টা খা না।
বারি জুইরা হেতা নাই কুত্তার শইল্ল লাজাই।
বেইন্না বেলার মুডি সারাদিনের খুডি।
ভ
ভাত ছিটাইলে কাওয়ার অভাব হয় না।
ভালা গাঙের পানি, ভালা কাফরের কানি।
ভাই না অইয়া ভাইয়ের হালা অইলে কাজ অইত।
ভাত খা না চা খা, হোন্ডার লইয়া আগত যা।
ভাত ফানা চা হা
আগ্-দ গেলে বডবডি লইয়া যা।
ম
মোল্লার দৌড় মসজিদ পর্যন্ত।
মাঘের জারে বাঘও পালায়।
মাগনা গরুর দাঁত নাই।
মা মরলে বাপ তালুই।
মার ফুরেনা মারানীর ফুরে।
মার ফুরে না মারানির ফুরে, ঘড় ফুরে না ধুমা উড়ে।
মাগনা গরুর দাঁত নাই।
মুরুক্কুর তেরি ফন্ডিতের মা,,,
কি কি আনছ কয়া ফালাও নাহ।
য
যে নালে উৎপত্তি, সেই নালে বিনাশ।
যার বিয়া হের হবর নাই পাড়াপড়শির ঘুম নাই।
যদি দেহে সংসারের বাও, মুরগি তুলে ছাও।
যেইনা হগাদের চেহারা নাম রাখছে পেয়ারা।
যে আগুন খায়ব সেই আংরা লেদাইব।
র
ল
লাইগ্যা থাকলে ম্যাইগা খাওয়া লাগে না।
শ
শিন্নির নামে লেস নাই পিরের কুতকুতি।
ষ
স
সিয়ানের কাম বিয়ানে নাদানের কাম মাদানে।*
সুর্যের তাইক্কা বালু গরম বিশি।
সুদিনের পানসু ভাই কুদিনের কেহই নাই।
হ
হা ল বেডি হা, ঝি ফুত না অইতে হা।
হাইয়ের লাইজ্ঞা অ কান্দে, হুটকির ছালুন অ রান্দে।
হাইয়ের ভাত টগর-মগর, ফুতের ভাত আইট্যা নগর।
হাছতে হাছতে ফেছা রাজা।
হায়ের নামে লেশ নাই, দেওর চৌদ্দ জন।
হাইচ্ছৎ ছাড়ে না চুরে, টুন্ডা হাতে হিন কুঁড়ে।
হাইয়ের আছে বার ভাই, হাই না থাকলে কেউই নাই।
হাদলে জামাই খা না, পরদা জামাই পা না।
হেক্কায় কুত্তা কামরা না।
হুটকির নাওয়ে বিলাই চহিদার।
হুলার হুলাও গেছে, গাইলের হোলাও গেছে।
হুটকি দিয়া ভাত হামু বিলাই রে আঙ্গুল দেখামু।
হগল মাছে গু খা, নাম ফরে গাওরা মাছের।
হাইতো ফা না ফহিন্নি মাডা দিয়া হুসে।
হাই মরছে আঘুনে কোয়ান দিছে ফাগুনে।
হাতিরের ভালা হাতির ডেংগার মুডা চাইর আনা।
হিলে পাডার ঘষাঘষি মইছের কাম শেষ।
হাইতো ফানা ফহিন্নির ফুত মাডা দা হছে।
উপরোক্ত প্রবাদগুলোর মধ্যে ব্যবহৃত বেইন্না বেলার মুডি প্রমিথ বাংলায় সকাল বেলার অবলম্বন, নাদানের কাম- অজ্ঞলোকের কাজ, সিয়ানের কাম- জ্ঞানী লোকের কাজ, হাই মরছে আঘুনে- অর্থাৎ স্বামী মারা গেছে অঘ্রানে, কুয়ান দিছে ফাগুনে- কান্না শুরু করেছে ফাল্গুনে, এসব প্রবাদ প্রবচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার লোকজ শব্দের যথার্থ প্রযোগের ফলে এখানকার মানুষ ও স্থানীয় ভাষা সম্পর্কে একটি ধারণা লাভ করা যায়।
সংকলনে: এস এম শাহনূর
কবি ও আঞ্চলিক ইতিহাস গবেষক