করোনা মহামারিতে বিনা মূল্যে অক্সিজেন ভর্তি সিলিন্ডার পৌঁছে দিতেন তাঁরা। পাঁচটি বিদ্যালয়ের দেয়ালে ছবি এঁকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ফুটিয়ে তুলেছেন। এবার ইংরেজিতে লেখা ‘আই লাভ ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ (ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে ভালোবাসি) নামে একটি ফলক স্থাপন করেছেন নিজেদের চাঁদায়।
‘ আই লাভ ব্রাহ্মণবাড়িয়া ’ ফলক নির্মাণ
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ফেসবুকভিত্তিক স্বেচ্ছাসেবী সামাজিক সংগঠন ‘আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ এ ফলক নির্মাণ করেছে। রোববার সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে ফারুকী পার্কে স্থাপন করা এ ফলক উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম।
সংগঠন সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসনের সহায়তায় এ ফলক নির্মাণে সংগঠনের প্রায় পাঁচ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। সংগঠনের সদস্যদের মাসিক চাঁদা দিয়ে কাজটি করেছেন। বর্তমানে এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা ২৮। দেশের বিভিন্ন জায়গায় চাকরি করা তরুণ-যুবকেরা এই সংগঠনের সদস্য। চলতি বছরের গত ৯ জুন এর কাজ শুরু হয়। সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা বিবর্ধন রায়ের সার্বিক তত্ত্বাবধানে সংগঠনের সদস্য আনাস হাসান, মিশুক মাহমুদ, পুলক দাস, আলামিন রাকিব, কাজল সাহা, রেজুয়ান রনি ও ইফতিখার শাওন কাজ করেছেন। এই ফলকের কাজ শেষ হতে দেড় মাস সময় লেগেছে। এটি যেন দীর্ঘদিন স্থায়ী হয়, সে জন্য পাথরের ঢালায় দেওয়া হয়েছে।
রোববার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম। আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ শাখাওয়াত হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান চিকিৎসক আবু সাঈদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) জিয়াউল হক মীর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বাহারুল ইসলাম, সূর্যমুখী কিন্ডারগার্টেনের অধ্যক্ষ সালমা বারী, কসবার সৈয়দাবাদ আদর্শ মহাবিদ্যালয়ের প্রভাষক এস আর এম ওসমান গনি। শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন সংগঠনের সদস্য রেজুয়ান রনি।
জেলা প্রশাসক মো. শাহগীর আলম বলেন, ‘আমরাই ব্রাহ্মণবাড়িয়া’ একটি ব্যতিক্রমধর্মী ফলক নির্মাণ করেছে। তিনি আয়োজকদের এ স্তম্ভের সৌন্দর্য রক্ষার বিষয়ে সচেতন থাকার আহ্বান জানান। এ সময় সংগঠনের পক্ষ থেকে ফলকের এলাকায় একটি বাতি স্থাপনের দাবি জানানো হলে, জেলা প্রশাসক সম্মতি প্রকাশ করেন।
সংগঠনের সদস্যরা বলেন, ৮ ডিসেম্বর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার মুক্ত দিবস উপলক্ষে ২০১৫ সালে ‘রঙিন হবে আমাদের স্কুল’ স্লোগানে বিদ্যাপীঠ অন্নদা সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের দেয়ালে মুক্তিযুদ্ধের বীরত্বগাথার নানা ছবি আঁকেন সদস্যরা। পরে ২০১৯ সাল পর্যন্ত গভ. মডেল গার্লস হাইস্কুল, সাবেরা সোবহান সরকারি বালিকা উচ্চবিদ্যালয়, খ্রিষ্টিয়ান মিশন প্রাইমারি স্কুলে ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া উচ্চবিদ্যালয়ের দেয়াল মুক্তিযুদ্ধের ছবিতে রাঙিয়ে তোলা হয়। এ ছাড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে ২০১৫ সালে ভ্রাম্যমাণ চটপটি ও ঝালমুড়ি বিক্রেতাদের আবর্জনা ফেলার ঝুড়ি বিতরণ, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে ডাস্টবিন স্থাপন করা হয়েছে।