ঘরে বসেই যাঁরা ছানামুখীর স্বাদ নিতে চান, তাঁদের জন্য রইল রেসিপি।
বাংলাদেশের মিষ্টান্নের মধ্যে প্রথম জিআই (ভৌগোলিক নির্দেশক) স্বীকৃতি পায় বগুড়ার দই। এরপর একে একে স্বীকৃতি পেয়েছে কুমিল্লার রসমালাই, কুষ্টিয়ার তিলের খাজা, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, পোড়াবাড়ীর চমচম, মুক্তাগাছার মণ্ডা। এই তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখী। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ঐতিহ্যের সঙ্গে মিশে আছে এই মিষ্টি। জিআই স্বীকৃতি এই মিষ্টিকে আরও এক ধাপ এগিয়ে দিল। কোনো একটি দেশের নির্দিষ্ট ভূখণ্ডের মাটি, পানি, আবহাওয়ার কারণে সেখানকার জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি যদি কোনো একটি পণ্য উৎপাদনে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তাহলে সেটিকে সেই দেশের ভৌগোলিক নির্দেশক বা জিওগ্রাফিক্যাল ইন্ডিকেশন (জিআই) পণ্যের স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দেশের বাজারে তো বটেই, বিশেষ করে বিদেশের বাজারেও একটি পণ্য চেনার জন্য জিআই স্বীকৃতি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কোনো পণ্যের বিস্তারিত না জেনে জিআই স্বীকৃতির ওপর নির্ভর করে সেই পণ্য ব্যবহার করতে পারেন ভোক্তারা। ব্র্যান্ড ভ্যালুর দিক থেকে জিআই পণ্য একই ধরনের অন্য পণ্যের থেকে এগিয়ে থাকে এবং দামও অন্তত ২০ থেকে ৩০ শতাংশ বেশি পেয়ে থাকে। জিআই স্বীকৃতি বাড়িয়ে দিল ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ছানামুখীর জনপ্রিয়তা। দেশের অন্য অঞ্চলের মানুষও এখন এই মিষ্টির প্রতি আগ্রহী হবেন। জানবেন ছানামুখীর কথা।
ছানামুখী উপকরণ
তরল ফুলক্রিম দুধ ১ লিটার, লেবুর রস বা ভিনেগার ২ টেবিল চামচ, ছেঁকে নেওয়ার জন্য পাতলা কাপড় বা চিজ ক্লথ। চিনি ১ কাপ, এলাচি ২টি, পানি আধা কাপ।
প্রণালি
প্রথমে একটি পাতিলে দুধ জ্বাল দিন। দুধ একবার ফুটে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে লেবুর রস বা ভিনেগার দিয়ে দিন। পানি থেকে জমাট বাঁধা দুধ আলাদা হয়ে গেলেই বুঝতে পারবেন ছানা হয়ে গেছে। ছানা পাতলা কাপড়ে ছেঁকে নিয়ে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানিতে ধুয়ে নিতে হবে, যেন ভিনেগারের গন্ধ চলে যায়। ছানা খুব বেশি ঠান্ডা পানিতে ধোবেন না। শক্ত হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পানি ঝরানোর জন্য ১৫ থেকে ২০ মিনিট কোথাও ঝুলিয়ে রাখুন। হাত দিয়ে চেপে পানি বের করবেন না। সম্পূর্ণ পানি ঝরে গেলে এই শুকনা ছানা দুই থেকে তিন ঘণ্টা ফ্রিজে রেখে দিতে হবে। ছানা শক্ত হয়ে যাবে। এবার শক্ত ছানা ছোট ছোট চার কোনা আকারে কেটে নিন। একটি প্যানে চিনি, পানি ও এলাচি দিয়ে মাঝারি আঁচে চুলায় ফুটিয়ে নিন। তাতে ছানার টুকরাগুলো ছেড়ে দিয়ে হালকাভাবে নাড়ুন। চার থেকে পাঁচ মিনিট আস্তে আস্তে নাড়ার পর চুলা থেকে নামিয়ে নিন। চুলা থেকে নামানোর পরও কিছুক্ষণ নাড়তে হবে। একসময় দেখা যাবে, চিনি ছানার গায়ে সুন্দরভাবে লেগে গিয়েছে। ব্যস, তৈরি হয়ে যাবে ছানামুখী।