কারফিউর মধ্যেই স্বাভাবিক যান চলাচল, বের হচ্ছেন গোপালগঞ্জের মানুষ

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) সমাবেশ ঘিরে গত বুধবার গোপালগঞ্জে দিনভর দফায় দফায় হামলা, সংঘর্ষ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগ ও ককটেল বিস্ফোরণের পর ওই রাত থেকে জারি করা কারফিউ অব্যাহত আছে। গতকাল বৃহস্পতিবার কারফিউর সময়সীমা বৃদ্ধি করে আজ শুক্রবার বেলা ১১টা পর্যন্ত এবং তিন ঘণ্টা শিথিল করে দুইটা থেকে অনির্দিষ্টকাল পর্যন্ত মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।

তবে আজ সকাল থেকে গোপালগঞ্জ শহর ও আশপাশের এলাকায় যানবাহনের স্বাভাবিক চলাচল দেখা গেছে। সকাল থেকেই আন্তজেলা বাস চলাচল শুরু হয়। গতকালের তুলনায় আজ সড়কে মানুষ বেশি দেখা গেছে।

সকাল সাড়ে আটটার দিকে গোপালগঞ্জের পুলিশ লাইনস ও চুয়াডাঙ্গা মোড়ে গিয়ে দেখা যায়, গোপালগঞ্জ-টেকেরহাট ও গোপালগঞ্জ-ব্যাসপুর রুটের বাস ছেড়ে গেছে। দূরপাল্লার বাস চলাচলও গতকালের তুলনায় বেশি ছিল।

গোপালগঞ্জ শহরের কাঁচাবাজার, লঞ্চঘাট, বিসিক এলাকা—এসব জায়গায় মানুষের উপস্থিতি ও ব্যস্ততা বেশি দেখা যায়। বিসিক এলাকায় বাজার করতে আসা কয়েকজন নারীর সঙ্গে কথা হয়। তাঁদের একজন সাবিনা বেগম বলেন, ‘গত দুই দিন বাসা থেকে বের হতে পারিনি। তাই আজ সকালে বাজারের উদ্দেশে বের হয়েছি।’

লঞ্চঘাট এলাকায় ইজিবাইক, মাহেন্দ্র, রিকশা—সব যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলতে দেখা গেছে। চালকেরা নির্দিষ্ট স্থানে দাঁড়িয়ে যাত্রী নেওয়ার অপেক্ষায় ছিলেন।

রিকশাচালক উজ্জ্বল হাওলাদার বলেন, ‘পেটের দায়ে রিকশা চালাই। দুই দিন রিকশা চালাতে পারিনি, কোনো যাত্রী ছিল না। ঘরে চাল নেই, পেটের দায়ে বের হয়েছি। ঘরে বসে থাকলে পেটে ভাত যাবে না। আমি জানি কারফিউ চলছে, কিন্তু কী করব? জীবনের তাগিদে বের হয়েছি।’

চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে আম নিয়ে আসা ব্যবসায়ী মামুন ব্যাপারী বলেন, ‘দুই দিন আগে চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে গোপালগঞ্জে আম এনেছিলাম। গ্যাঞ্জামের কারণে গত দুই দিন কিছুই বিক্রি করতে পারিনি। এত টাকার আম সব পচে গেল। আজ কিছু আম নিয়ে বসেছি বিক্রির জন্য।’

বুধবার এনসিপির ‘জুলাই পদযাত্রা’কে কেন্দ্র করে গোপালগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও নিষিদ্ধ ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা হামলা চালায়। হামলাকারীদের সঙ্গে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সংঘর্ষে চারজন নিহত হন। এ ঘটনায় অন্তত নয়জন গুলিবিদ্ধসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন।

Related Posts

About The Author