ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরে একই স্থানে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের কর্মসূচি থাকায় অপ্রীতিকর পরিস্থিতি এড়াতে ১৪৪ ধারা জারি করেছে উপজেলা প্রশাসন। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সমাবেশ ও আলোচনাস্থলসহ পুরো পৌর এলাকাকে এ নির্দেশনার আওতায় আনা হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহা. আবুল মুনসুর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
সভা-সমাবেশে নিষেধাজ্ঞার ওই আদেশ সূত্রে জানা গেছে, বাঞ্ছারামপুর সরকারি এসএম পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলন আয়োজনের ঘোষণা দেয় বিএনপির একাংশ। অন্যদিকে দলটির আরেক অংশ একই সময়ে ও স্থানে জাতীয় বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছে। কিন্তু কোনো পক্ষকেই কর্মসূচি আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়নি। উভয় পক্ষ একই স্থানে ও সময়ে সম্মেলন কিংবা আলেচনা সভা আয়োজন করলে ওই স্থান ও আশপাশের সাধারণ জনগণের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হতে পারে এবং আইনশৃঙ্লা পরিস্থিতির অবনতি ঘটতে পারে। তাই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মুহা. আবুল মনসুর ১৪৪ ধারা জারি করেন।
বাঞ্ছারামপুর সরকারি এস এম মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠ ও এর আশপাশের খালি জায়গা এবং সব বাঞ্ছারামপুর পৌরসভা এলাকার ভেতরে এ নিষেধাজ্ঞা প্রযোজ্য হবে। কোনো ব্যক্তি, সংগঠন, রাজনৈতিক দলের গণজমায়েত বা সভা-সমাবেশ, মিছিল, বিক্ষোভ মিছিল, শোভাযাত্রা ইত্যাদি কার্যক্রম গ্রহণ করতে পারবে না। যেকোনো ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনকে কেন্দ্র করে বাঞ্ছারামপুর সরকারি এস এম মডেল পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠ এবং পৌরসভা এলাকার মধ্যে চারজনের বেশি ব্যক্তি জমায়েত হতে পারবেন না।
বিএনপির স্থানীয় নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, আজ সম্মেলনটিতে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকার কথা ছিল। গত সোমবার বেলা দেড়টার দিকে উপজেলা ও পৌর বিএনপির সম্মেলন বাতিলের দাবিতে উপজেলা সদরের মাতুরবাড়ির মোড় থেকে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য মো. আবদুল খালেক, বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রফিক সিকদার ও জিয়া উদ্দিন, বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিপি সাইদুজ্জামানের নেতৃত্বে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়।
মিছিলটি উপজেলার প্রতাপগঞ্জ বাজারে আনোয়ারা মার্কেটের সামনে গেলে ওপর থেকে কৃষক দলের কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান ও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব এ কে এম মুসার অনুসারীরা ইটপাটকেল ও কাচের বোতল নিক্ষেপ শুরু করেন। ওই সময় দলটির দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে বিএনপির অন্তত ৫০ নেতা-কর্মী আহত হন। এসব কারণে প্রতিপক্ষের যেকোনো ধরনের রাজনৈতিক কর্মসূচি প্রতিহতের চেষ্টা করছে অন্য পক্ষ।