শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে ‘আমরণ অনশনে’ বসেন শিক্ষার্থীরা। গত বুধবার (১৯ জানুয়ারি) দুপুর ২টায় শাবির শিক্ষার্থীরা অনশনে বসেন। বুধবার (২৬ জানুয়ারি) সকাল ১০টা ২১ মিনিটে হামিদা আব্বাসী নামের এক অনশনরত শিক্ষার্থীকে পানি পান করিয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অনশন ভাঙান ড. জাফর ইকবাল।
অনশন শুরুর পর গত ৭ দিনে দফায় দফায় শিক্ষকেরা তাদের অনশন ভাঙানোর চেষ্টা করেছেন, তবে তারা রাজি হননি।
এর আগে অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও তার স্ত্রী ড. ইয়াসমিন হকের অনুরোধে বুধবার ভোর ৫টার দিকে তারা অনশন ভাঙার ব্যাপারে সম্মত হন শিক্ষার্থীরা।
সকাল ১০টার দিকে হাসপাতালে থাকা অনশনকারীরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থানরত অনশনরতদের সাথে একসঙ্গে মিলিত হন। এরপর তারা অনশন ভাঙেন।
এর আগে বুধবার (২৬ জানুয়ারি) ভোর ৪টার দিকে শাবি ক্যাম্পাসে এসে উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অবস্থানরতদের সাথে দেখা করেন জাফর ইকবাল। এসময় তিনি ও তার স্ত্রী অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের কথা শুনেন।
তারা আন্দোলনকারীদের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করেন। এরপর এক প্রেস ব্রিফিংয়ে অধ্যাপক জাফর ইকবাল বলেন, তোমরা টের পাচ্ছো না তোমরা কী করেছো। দেশের ৩৪টা ইউনিভার্সিটির ভাইস-চ্যান্সেলর বলেছেন যে, এই ইউনিভার্সিটির ভিসি যদি পদত্যাগ করেন তাহলে তারা সবাই পদত্যাগ করবেন। এটা দেখার খুবই শখ আমার।
জাফর ইকবাল বলেন, আমাদের এরকম ভাইস-চ্যান্সেলররা আছেন যাদের আদর্শ এত বেশি যে উনারা অন্যকে সহমর্মিতা দেখিয়ে নিজেরা পদত্যাগ করবেন। কিন্তু আমার মনে হয় না আমার এ আশা সহজে মিটবে। তোমরা বড়ধরনের নাড়া দিয়েছো। এখন কাউকে কোথাও ভিসি পদে বসানো হলে তার যোগ্যতা নিয়ে সবাই চুলচেড়া বিশ্লেষণ করবে।
তিনি বলেন, আমি অনেক কিছু জানি। কিন্তু পাবলিকলি বলতে চাই না। কারণ নিজেদের দুর্বলতার কথা বলতে ভালো লাগে না। তোমাদেরকে শুধু এটুকু বলতে চাই, তোমরা যেটা করেছো তার তুলনা নেই। এই আন্দোলনে বাংলাদেশের প্রত্যেকটা যুবক ছেলেমেয়ে তোমাদের সাথে আছে।
আরও পড়ুনঃ জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থগিত পরীক্ষা শুরু ৭ ফেব্রুয়ারি
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উদ্দেশে ড. ইয়াসমিন হক বলেন, ‘শিক্ষার্থীদের মামলা দিয়ে হয়রানি করবেন না। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের মানবিক সহায়তা দেওয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়টির সাবেক কয়েকজন শিক্ষার্থীকে আটক করা হয়েছে। মানবিক সহায়তা দেওয়া যদি অপরাধ হয় তাহলে আমি বঙ্গবন্ধুর ওপর একটি আর্টিকেল লিখে ১০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। সেই টাকাটা আমি তোমাদের দিলাম। আমাকে অ্যারেস্ট করুক।’
সূত্রঃ দৈনিক ইওেফাক