নিজস্ব প্রতিবেদক, মোঃ সাইফুল আলম – আখাউড়া ডট কম
৪র্থ ধাপে আখাউড়া উপজেলার ৫টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৫টি ইউনিয়ন হলো আখাউড়া দক্ষিণ, আখাউড়া উত্তর, মোগড়া, মনিয়ন্দ ও ধরখার ইউনিয়ন পরিষদ। প্রথম দিকে ২৩ ডিসেম্বর নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হলেও পিছিয়েছে এই তারিখ। নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৬ ডিসেম্বর ২০২১।
গত শনিবার ২০ নভেম্বর ঘোষণা আসে এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা মার্কা থাকছে না। তারপর থেকেই নানান সমালোচনা ও আলোচনা শুরু হয়েছে। এলাকার বিভিন্ন প্রার্থী, পক্ষ ও বিপক্ষের সবাই নানান আলোচনার জন্ম দিচ্ছে। চায়ের কাপে ঝড় উঠছে এসব আলোচনার আড্ডায়। অনেকেই কটূক্তি করছেন কি কারনে এই সিদ্ধান্ত। হেরে যাবার ভয় নাকি অন্য কোন দুরভিসন্ধি?
সব আলোচনার অবসান ঘটিয়ে দেন আইনমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. আনিসুল হক। গত ২০ নভেম্বর শনিবার দুপুরে আখাউড়া পৌরসভা ভবনের মিলনায়তনে উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ বর্ধিত সভা অনুষ্ঠিত হয়। এই সভায় ভার্চ্যুয়ালি বক্তব্য প্রদান করেন আইনমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য এড. আনিসুল হক। তিনি বলেন, এবারের ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রতীক নৌকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে না।
মানুষের মনের কথা বুঝার চেষ্টা করে নৌকা প্রতীক বরাদ্দ না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটবে। বক্তব্যের সময় তিনি কসবাতেও নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হবে না বলে জানান। তিনি আরো বলেন যারা বাংলাদেশকে ধ্বংস করতে চায়, তারা চায় না সুষ্ঠু নির্বাচন হোক। এ বিষয়ে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। আমার যতটুকু ক্ষমতা আছে সেটি প্রয়োগ করে সুশৃঙ্খল নির্বাচনের ব্যবস্থা করবো।
আখাউড়া পৌর মেয়র তাকজিল খলিফা কাজলের সঞ্চালনায় এতে সভাপতিত্ব করেন উপজেলা আওয়ামী লীগের আহবায়ক মো. জয়নাল আবেদীন। এতে
নির্বাচনের প্রায় দেড় শতাধিক সম্ভাব্য প্রার্থী উপস্থিত ছিলেন।
কসবা-আখাউড়ার (ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৪) সাংসদ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হয়ে আনিসুল হক বলেন, ‘মনে রাখবেন, ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দল থেকে দেশ বড়। জনগণ যাতে তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারেন, তাই দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন যাতে কারচুপি না হয়, সে ব্যবস্থা করা হবে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে কোনো বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি করা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’
ইউপি নির্বাচনের গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে সভায় আইনমন্ত্রী বলেন, ‘জনগণের কাছে ইউপি নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ। শত বছর ধরে যে স্থানীয় সরকার নির্বাচন দেখে আসছি, করে আসছি, সেখানে আগে দলের কোনো প্রার্থী থাকতেন না। যাঁরা দাঁড়াতেন, জনগণ তাঁদের মধ্য থেকে কে ভালো কে মন্দ, সেটা দেখে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতেন। ভোট দেওয়ার অধিকার জনগণ রাখেন। পরিবর্তনটা প্রয়োজন, প্রস্তুতিটাও প্রয়োজন।’
আখাউড়া ও কসবার বিভিন্ন এলাকার চেয়ারম্যান ও জনপ্রতিনিধিরা এই সিদ্ধান্তে স্বাগত জানিয়েছেন। আখাউড়া উত্তর ইউপির চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. শাহজাহান বলেন, ‘আমি আওয়ামী লীগ থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছিলাম। মন্ত্রী মহোদয় সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, প্রতীক ছাড়া নির্বাচন হবে। কসবার বিনাউটি ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুরুল আলম বলেন, ‘কসবা-আখাউড়ার বিভিন্ন ইউপি নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে দলীয় প্রতীক না দেওয়ার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাচ্ছি। এছাড়া বিনাউটি ইউনিয়ন যুবলীগের সদস্যসচিব ও সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী মো. তছলিমুর রেজা বলেন, ‘প্রতীক ছাড়া নির্বাচন, মন্ত্রী মহোদয় সঠিক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
এদিকে কসবা পশ্চিম ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সম্ভাব্য চেয়ারম্যান প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘দলীয় প্রতীক ছাড়া নির্বাচন হলেই ভালো হবে। কোনো ধরনের প্রভাব থাকবে না। জনগণ তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিয়ে নির্বাচিত করতে পারবেন। কসবা-আখাউড়ার গণমানুষের নেতা সাংসদ ও আইনমন্ত্রী আনিসুল হক যে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সেটাকে স্বাগত জানাচ্ছি।