নিজস্ব প্রতিবেদক, মোঃ সাইফুল আলম – আখাউড়া ডট কম
পৃথিবীর সবচেয়ে দীর্ঘ সমুদ্র সৈকত বাংলাদেশের কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত। দেশের মানুষের প্রধান আকর্ষণ ও দর্শনীয় স্থান। এই সমুদ্র সৈকতে সারাদেশ থেকে প্রচুর দর্শনার্থী আসেন। আবার দেশে-বিদেশ থেকেও অনেকে ঘুরতে আসেন এখানে।
আমাদের দেশের মানুষ অনেকে এই সমুদ্র সৈকত হয়তবা অনেকবার ঘুরে গেছেন। তাই তো নতুন নতুন ভ্রমণপ্রিয় জায়গার খোঁজ করে থাকেন। কক্সবাজার নামের সাথে মিল রেখে বেশ কয়েক বছর ধরেই মিনি কক্সবাজার এর চর্চা শুরু হয়েছে। যার শুরুটা হয় নবাবগঞ্জ দোহার ‘মিনি কক্সবাজার’ থেকে। কক্সবাজারের আদলে ছোট পরিসরে ঢাকার অদূরে দোহারে নদীর তীরে গড়ে উঠে এই মিনি কক্সবাজার খ্যাত সৈকত। ঢাকার খুব কাছে বলে অনেকেই ঘুরতে যান এখানে। বিশেষ করে দিনে এসে দিনে ফিরে যাওয়া যায় বলেই বেশিরভাগ মানুষ এখানে ঘুরতে যান।
তেমনি করে দেশের অনেক স্থানেই শুনা যায় মিনি কক্সবাজার এর কথা। নাটোর, রাজশাহী, কিশোরগঞ্জ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া অন্যতম। আবার ব্রাহ্মণবাড়িয়ার গোকর্ণ ঘাট, আখাউড়া বাইপাস, রসুলপুর, সরাইল ধরন্তি অন্যতম দর্শনীয় স্থান হিসেবে সবার মনে জায়গা করে নিয়েছে এই ‘মিনি কক্সবাজার’ হিসেবে।
বর্ষার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার ‘আখাউড়া মিনি কক্সবাজার’ এ উপচেপড়া ভিড় চোখে পড়ে। নানান বয়সের মানুষ বিকেলে এখানে সময় কাটাতে আসেন। অনেকে আবার নৌকা যোগে ঘুরতে আসেন। এ নজরকাড়া দৃশ্য দেখতে পড়ন্ত বিকেলে তিতাস পাড়ের মিনি কক্সবাজার থেকে শীতল বাতাসের পরশ অনুভব করতে দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে থাকে। পরিবার-পরিজন বন্ধু বান্ধব নিয়ে “আখাউড়া মিনি কক্সবাজার” ঘুরে-ফিরে আনন্দ উপভোগ করছেন নানা বয়সের মানুষ।
বিশেষ করে ঈদের সিজনে ওই স্থানটি চারপাশে পানি টলোমলো করে। বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সেখানে গেলে আখাউড়া মিনি কক্সবাজার কোড্ডা বাইপাসের এ স্থানে গিয়ে এমন চিত্র দেখা যায়। আখাউড়ার আশপাশসহ পার্শ্ববর্তী উপজেলা থেকে নানা বয়সী শতশত দর্শণার্থী ছুটে আসে প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য উপভোগের জন্য। তিতাস ব্রীজের নিচে থেকে অনেকেই ইঞ্জিন নৌকা আবার কেউ কেউ স্পীড বোড নিয়ে তিতাসের বুকে ঘুরতে দেখা যায়।
এদিকে দর্শণার্থীদের কেন্দ্র করে জমজমাট এখানকার শরবত, বুট, বাদাম, চা-স্টল ও ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা। আখাউড়া মসজীদ পাড়া থেকে আসা রাজীব চৌধূরী জানান, “ঈদের ছুটিতে স্ত্রী ও একমাত্র সন্তানকে নিয়ে এখানে বেড়াতে এসেছি, এখানকার পরিবেশ যে কারোরই মন ভুলাবে।” মিসেস রাজীব বলেন, “এমনিতে তেমন একটা বেড়োনো হয় না। আজ বেবীর জন্মদিন উপলক্ষে বেরুতে পেরেছি। এখানকার পরিবেশটা খুবই সুন্দর। দখিনা বাতাসে মন ভুলে যায় আপন ঠিকানায়।”
সৌদী আরব প্রবাসী নূর মোহাম্মাদ বলেন, “প্রবাস থেকে প্রায় এ জায়গার অনেক সুনাম শুনতাম। ফেসবুকের মাধ্যমে এ জায়গার সবকিছুই অনুভব করতাম। তাই এবার ছুটিতে বেড়াতে চলে আসলাম।”
দেবগ্রাম থেকে ঘুরতে আসা জারির হোসেন খান বিমান জানান, এখানকার পরিবেশ-প্রকৃতি এবং রূপলাবণ্য পর্যটকদের প্রতিনিয়ত মুগ্ধ করে। এই মুগ্ধতাই তাদেরকে এখানে বার বার নিয়ে আসে। সরকারের কাছে তিনি দাবী জানান, এই তিতাস পাড়ের আখাউড়া ‘মিনি কক্সবাজার’ নামক জায়গাটিকে পর্যটকদের সুবিধার্থে যেন পর্যবেক্ষণ করা হয় এবং পর্যটকদের জন্য এখানে আরো সুন্দর ও মনোরম পরিবেশ গড়ে তোলা হয়।
তাই আমাদের কাছে মনে হয়, এটি হতে পারে আমাদের কাছে নতুন দিগন্ত। আখাউড়া মিনি কক্সবাজার হতে পারে পর্যটনের আরেকটি পলক। এর মাধ্যমে হতে পারে অনেকের কর্মসংস্থানের উপায়।
আখাউড়া মিনি কক্সবাজার যাবার সহজ রাস্তা ও খরচ:
ঢাকা থেকে ট্রেনে আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন আসতে পারেন। ট্রেন ভেদে জনপ্রতি ভাড়া ৭০ থেকে ২৬৫ টাকা। এছাড়া বাসে করেও ঢাকা থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া হয়ে আখাউড়া আসতে পারেন। এর পর আখাউড়া রেলওয়ে স্টেশন থেকে অল্প দূরত্ব হেঁটেই আসতে পারেন। অথবা কেউ চাইলে সড়ক বাজার থেকে অটো বা সিএনজি করে আসতে পারেন।