কেন্দ্রে গিয়ে জানা গেল পরীক্ষা স্থগিত!

অনলাইন ডেস্ক: করোনা মহামারিতে পরীক্ষা স্থগিত হবার ১০ মাস পর মধ্য জানুয়ারিতে আবারও পরীক্ষা শুরু করেছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে পুনরায় পরীক্ষা স্থগিত করেছে । গত সোমবার রাত ৮টায় এক জরুরি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে পরীক্ষা স্থগিতের বিষয়টি জানায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। অথচ এর পরদিনই ২৩ ফেব্রুয়ারি মাস্টার্স পরীক্ষার পূর্ব নির্ধারিত সূচি ছিল। আরিফুল ইসলাম নামে মাস্টার্স ফাইনাল বর্ষের এক শিক্ষার্থী জানান, মঙ্গলবার পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে তিনি জানতে পারেন যে, পরীক্ষা স্থগিত হয়েছে।

অভিভাবক, কলেজ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা বলছেন, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা চলমান ছিল। আবাসিক হলে থাকার কোনো বিষয় ছিল না। পর্যাপ্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনেই এই পরীক্ষার আয়োজন করা হয়েছে। সব শিক্ষার্থীর মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করার জন্য টাকা পাঠিয়েছিল কলেজগুলোতে। তাদের বক্তব্য, এই পরীক্ষা চালু রাখলে খুব একটা সমস্যা হতো না।

তবে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বলছে, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করতে গিয়েই পরীক্ষা স্থগিত করার মতো সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে। এর আগে ২২ ফেব্রুয়ারি এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী ২৪ মের আগে কোনো ধরনের ক্লাস ও পরীক্ষা হবে না। অর্থাৎ সব বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস ও পরীক্ষা আগামী তিন মাস বন্ধ রাখতে হবে। এর আওতায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ও পড়ে। আর জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কলেজগুলোর পরীক্ষা নিয়ন্ত্রণ ও পরিচালনা করে থাকে।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমান বলেন, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর সঙ্গে সমন্বয় করার জন্য জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষাগুলো স্থগিত করা হয়েছে। আমরা মনে করি, সবাইকে ভ্যাকসিন দেওয়ার পরই পরীক্ষা কার্যক্রম চালু করা উচিত। হঠাৎ পরীক্ষা স্থগিতের সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘রাতে পরীক্ষা স্থগিতের পর ব্যাপকভাবে প্রচারের ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীদের কাছে স্থগিত হবার তথ্যটি পৌঁছায়।’

বর্তমানে তিন বর্ষের পরীক্ষা চলমান ছিল। এর মধ্যে অনার্স চূড়ান্ত বর্ষের লিখিত সব পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আগামী মার্চ থেকে ব্যবহারিক ও মৌখিক পরীক্ষা হবার কথা ছিল। এছাড়া ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের পরীক্ষা চলমান ছিল। চলমান ছিল মাস্টার্স চূড়ান্ত পরীক্ষাও। পরীক্ষার জন্য নির্ধারিত সূচি ছিল ডিগ্রি তৃতীয় বর্ষ চূড়ান্ত এবং মাস্টার্স প্রিলিমিনারি পরীক্ষা। এছাড়া বিভিন্ন প্রফেশনাল পরীক্ষাও চলমান ছিল।

এর আগে করোনার কারণে গত মার্চ থেকে ১০ মাসে পাঁচ শতাধিক বিষয়ের পরীক্ষা স্থগিত হয়। এই স্থগিত হওয়া পরীক্ষার আয়োজন শুরু হয় ১৬ জানুয়ারি থেকে। অনুমতির জন্য মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেছিল জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়। তবে করোনার মধ্যে পরীক্ষা শুরু করতে বেশ কিছু শর্তারোপ করেছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরীক্ষাকেন্দ্রগুলোতে এসব শর্ত মেনেই পরীক্ষা আয়োজন করতে বলা হয়েছিল।

জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. বদরুজ্জামান জানিয়েছিলেন, ‘করোনার কারণে ১০ মাসের স্থগিত হওয়া পরীক্ষা ২০২১ সালের মধ্যেই শেষ করা যাবে।’ তবে এ নিয়ে এখন অনিশ্চয়তা তৈরি হলো।

Related Posts

About The Author

Add Comment