ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়ায় তরুণীকে অপহরণের অভিযোগ সাবেক গৃহশিক্ষকের বিরুদ্ধে । তাঁকে উদ্ধারের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন তাঁর মা-বাবা। এ সময় ওই তরুণীর শিশুসন্তান ও তাঁর শ্বশুর-শাশুড়িও উপস্থিত ছিলেন। বুধবার দুপুরে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়নের বড় কুড়িপাইকা গ্রামের বিল্লাল ভূঁইয়ার বাড়িতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে তরুণীর মা বলেন, তাঁদের পাশের গ্রামের মনিরুল ইসলাম ওরফে মনির মাস্টার (৩৭) একসময় তাঁর মেয়ের গৃহশিক্ষক ছিলেন। এ সময় মনিরুল তাঁর মেয়ের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করেন। পরিবারের সদস্যরা মানসম্মানের কথা চিন্তা করে মেয়েকে অন্যত্র বিয়ে দেন। বর্তমানে তাঁর (মেয়ে) ১৭ মাস বয়সী একটি ছেলেসন্তান আছে। জামাতা প্রবাসী। বিয়ের পরও মনিরুল তাঁর মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে চাইলে তাঁরা তাঁকে নিষেধ করেন। এ কারণে মনিরুল ক্ষিপ্ত হয়ে মেয়েটির মা-বাবা ও এক ভাইকে আসামি করে আদালতে বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট এবং তাঁর স্ত্রীকে মারধরের অভিযোগে একটি মামলা করেছেন।
তরুণীর মা আরও বলেন, ২০ জুলাই তিনি মেয়েকে নিয়ে ওই মামলার হাজিরা দিতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যান। ফেরার সময় মনিরুল ও তাঁর সহযোগীরা আদালতের ফটকের সামনে থেকে তাঁর মেয়েকে জোরপূর্বক সিএনজিচালিত অটোরিকশায় উঠিয়ে নিয়ে যান। এ ঘটনায় তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া নারী ও শিশু আদালতে মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে অপহরণের মামলা করেছেন।
তরুণীর মা অভিযোগ করেন, ‘মনির মাস্টার আমার মেয়েকে গোপন কোনো জায়গায় লুকিয়ে রেখেছে। তাঁর কবল থেকে মেয়েকে উদ্ধারের জন্য স্থানীয় সংসদ সদস্য আইনমন্ত্রী আনিসুল হকসহ প্রশাসনের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’ কান্নাজড়িতে কণ্ঠে তিনি বলেন, ‘১৭ মাস বয়সী আমার নাতিটি মাকে না দেখে কান্নাকাটি করে। কিছু খেতে চায় না। দিন দিন না খেয়ে সে অসুস্থ হয়ে পড়ছে। মনির মাস্টার আমার পরিবারকে ধ্বংস করে দিয়েছে। সে মঙ্গলবার রাতেও আমাকে ফোন দিয়ে সংবাদ সম্মেলন না করার জন্য হুমকি দিয়েছে।’
এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে মুঠোফোনে কথা হয় অভিযুক্ত মনিরুল ইসলামের সঙ্গে। তিনি কোথায় আছেন, প্রশ্ন করলে এড়িয়ে যান। অপহরণের অভিযোগের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘অভিযোগ সত্য নয়। আমার বিরুদ্ধে এসব ষড়যন্ত্র। আমাকে সামাজিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার জন্য এসব অভিযোগ করছে।’ তিনি বলেন, ‘মেয়েটির পরিবার আমার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা করেছিল। ওই মামলাগুলো খারিজ হয়ে যায়। পরে তাঁরা আমার বাড়িতে এসে ভাঙচুর, লুটপাট করেছেন। এমনকি আমার স্ত্রীকে মারধর করেছিলেন। ওই মামলায় মেয়েসহ তাঁরা চারজনই জেল খেটেছিলেন। ওই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে আমার বিরুদ্ধে আরও একটি মিথ্যা অপহরণের মামলা করেছেন।’ মনিরুল দাবি করেন, ‘মেয়েটি নিজে থেকেই তাঁদের আত্মীয়স্বজনের বাড়িতে আত্মগোপন করেছে। আমি এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।’