ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থলবন্দর থেকে আশুগঞ্জ নৌবন্দর পর্যন্ত চার লেন মহাসড়ক প্রকল্পের কাজ ফেলে দেশে ফিরে যাওয়া ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা বাংলাদেশে ফিরেছেন। সোমবার জেলা প্রশাসকের কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয় ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আগামী সাত দিনের মধ্যে যন্ত্রপাতি বসানোসহ জনদুর্ভোগ নিরসনে রাস্তায় পানি দেওয়ার কাজ শুরু করবে ।
জানা গেছে, সোমবার দুপুরে জেলা প্রশাসকের কক্ষে আখাউরা স্থলবন্দর থেকে আশুগঞ্জ নৌবন্দর পর্যন্ত চার লেন প্রকল্পের কাজ শুরুর বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে একটি সভা করা হয় । সভায় উপস্থিত ছিলেন পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাবেদুর রহমান, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ দিদারুল আলম, কুমিল্লা সেনানিবাসের ৩৩ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. সাজ্জাদ, চার লেন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মো. শামীম আহমেদ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. সাইফুল ইসলাম, ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের ব্যবস্থাপক সুধীর কুমার ও প্রকৌশলী প্রশান্ত পালক, জেলা আনসার ভিডিপি কমান্ড্যান্টের প্রতিনিধি এবং ২৫ ও ৬০ বিজিবি ব্যাটালিয়নসহ আরও অনেকেই। সভায় ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। পুলিশ সুপার ও জেলা প্রশাসকের পক্ষ থেকে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তাদের যাবতীয় নিরাপত্তা প্রদানে আশ্বস্ত করা হয়।
পুলিশ সুপার মোঃ জাবেদুর রহামান বলেন
‘ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন আমাদের আন্তরিকতায় অনেক সন্তষ্ট ও খুশি। অতি ধ্রুত চার লেন প্রকল্পের কাজ শুরু করা হবে। ‘
প্রকল্প ও সওজ সূত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে আখাউরা সীমান্ত থেকে আশুগঞ্জ নৌবন্দর পর্যন্ত বিদ্যমান ২০ দশমিক ৫৮ কিলো সড়কের চার লেনে উন্নীত করার প্রকল্প দেওয়া হয়। সংশোধনের পর প্রকল্পের খরচ দাঁড়ায় ৫ হাজার ৭৯১ কোটি টাকা। এর মধ্য ভারতীয় ঋণ ২ হাজার ৯৮২ কোটি টাকা। ২য় ভারতীয় লাইন অব ক্রেডিট থেকে এই অর্থ দেওয়া হচ্ছে। বাকি ২ হাজার ৮০৯ কোটি টাকা দেবে সরকার। প্রকল্পটি শেষ হবার কথা ২০২৫ সালের জুন মাসে। চলতি বছরের 4 আগস্ট পর্যন্ত প্রকল্পের কাজ হয়েছে ৫৩ শতাংশ।
স্থানীয় ব্যক্তিদের সাথে কথা বলে জানা যায়, শেখ হাসিনা পালানোর পর থেকে ভারতীয় ঋণে চলমান এই প্রকল্প বন্ধ হয়ে যায়। এতে সিলেট-কুমিল্লা মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল বিশ্বরোড মোড় থেকে সদর উপজেলার ধরখার পর্যন্ত ২৭ কিলোমিটার সড়কের বিভিন্ন অংশে কোথাও পিচ উঠে গেছে, কোথাও বড় গর্ত, বড় বড় গর্তে জমেছে হাঁটুসমান পানি আবার কোথাও দেবে গেছে। যানজট লেগেই থাকে সবসময়।
এই মহাসড়ক প্রকল্পের ব্যবস্থাপক মোঃ শামীম আহমেদ জানান, ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান এফকনস ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেডের কর্মকর্তারা নিজেদের লোকদের নিরাপত্তার বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসন ও পুলিশ প্রশাসনের সঙ্গে সভা করেন। তাদের সার্বিক নিরাপত্তা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন প্রশাসন। আগামী সাত দিনের মধ্যে এই প্রকল্পের সকল যন্তপাতি বসানো সহ দুর্ভোগ কমাতে রাস্তায় পানি দেওয়ার কাজ শুরুর আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।