এতে করে বাজারের ব্যবসায়ীদের মধ্যে এক প্রকার চাপ অসন্তোষ বিরাজ করছে। বাজারের ব্যবসায়ী ও দীর্ঘদিন সভাপতি থাকা আলহাজ¦ নজরুল ইসলাম জিতু’র নেতৃত্বে রয়েছে ব্যবসায়ীদের একাংশ। অপরদিকে বাজারের অপর ব্যবসায়ী এমএ মতিনের নেতৃত্বে বাজারের ব্যবসায়ীদের একাংশ। এম এ মতিনের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীরা চান গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটের মাধ্যমে একটি পরিচালনা কমিটি। এরই মধ্যে আলহ্বাজ নজরুল ইসলামের নেতৃত্বে থাকা ব্যবসায়ীরা গত মঙ্গলবার বিকেলে একটি কমিটি ঘোষনা করেছেন। প্রতিপক্ষ বলছে পরামর্শ সভার নামে তারা একটি পকেট কমিটি গঠন করেছে। এ কমিটি তারা মানেন না। চলমান এই ঘটনায় বাজারের ব্যবসায়ী এবং সচেতন মহল রয়েছেন শংকায়। গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় কমিটি গঠনের বিষয়ে জেলা প্রশাসনের নিকট স্বারকলিপি দিয়েছেন এম এ মতিনের নেতৃত্বে ব্যবসায়ীদের একাংশ।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সীমান্তবর্তী কসবা উপজেলার ঐতিহ্যবাহী কুটি বাজারটি প্রায় তিনশত বছরের পুরোনো । এক সময় এ বাজারে দেশী-বিদেশী পণ্যবাহী জাহাজ আসা-যাওয়া করতো। হাজার হাজার দোকান পাট ও ধান, চাল ও পাটের গোদামসহ অত্রাঞ্চলের দেশী-বিদেশী পাইকারী পণ্যের মোকাম ছিলো এই কুটি বাজার। বৃহত্তর কুমিল্লা অঞ্চলের মানুষের কাছে প্রসিদ্ধ ছিলো এই কুটি বাজার। কালের বিবর্তনে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বাজার গঠন হওয়ায় এই বাজারটি ঐহিত্য এখন কিছুটা ম্লান। এরপরেও এই কুটি বাজারটি সীমান্তবর্তী কসবা উপজেলার বানিজ্যির শহর হিসেবে খ্যাত। এখনো রয়েছে হাজারের উপরে পাইকারী ও খুচরা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। রয়েছে তেল,চাল, ধানের মিলসহ একাধিক ব্যাংক।
বাজারটি এতো পুরোনো হলেও বিগত সময়ে পরিচালনায় থাকা নেতৃবৃন্দ নিবন্ধনের আওতায় আনতে পারেননি বলে অভিযোগ সচেতন মহলের। তিন বছর পর পর পরিচালনা কমিটি গঠন করার প্রক্রিয়া থাকলেও গত কমিটি গঠন করা হয় প্রায় ৮ বছর আগে। ৫ বছর আগে বিগত মেয়াদ পার হলেও বাজারের সাবেক সেক্রেটারী ছাইদুর রহমান স্বপনের দাপটে নতুন কমিটি করা সম্ভব হয়নি বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তিনি আওয়ামী লীগ নেতা ও সাবেক আইনমন্ত্রীর ফুপাতো ভাই হওয়ায় কেউ তার উপরে কথা বলার সাহস পেতনা। ৫ আগষ্টের পরে মেয়াদোত্তির্ণ বাজার কমিটির সেক্রেটারী ছাইদুর রহমান স্বপনসহ অন্যরা পালিয়ে যায়। এরপর থেকে মেয়াদোত্তির্ণ কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম জিতু বাজারটি রক্ষনাবেক্ষনের কথা চিন্তা করে গত মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের একাংশ নিয়ে একটি কমিটি গঠন করেন বলে জানান তিনি। এতে এমএ মতিনসহ বাজারের অন্যান্য ব্যবসায়ীদের একাংশ এই কমিটির প্রতি অনাস্থা প্রদান করেন। তারা চান গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ভোটের মাধ্যমে কমিটি গঠন করা হোক।
এ বিষয়ে ব্যবসায়ীদের একাংশের নেতৃত্বে থাকা এম এ মতিন, ফিরোজ মিয়া, আফতাব নাছির , কমল চৌধুরী, কাইয়ুম সরকার ও আবদুর রশিদসহ একাধিক ব্যবসায়ী বলেন, বর্তমান পকেট কমিটির সভাপতি নজরুল ইসলাম জিতু বিগত কমিটিরও সভাপতি ছিলেন। তৎকালীন সেক্রেটারির নেতৃত্বে বাজরে যে অনিয়ম হয়েছে তিনি তাতে সায় দিয়েছেন। তিনি বিগত কমিটির অপকর্মের দায় এড়াতে পারেন না। তাদের দাবী অবিলম্বে পকেট কমিটি বাতিল করে নির্বাচনের মাধ্যমে একটি পরিচালনা কমিটি গঠন করা হোক। তারা স্বৈরাচারী প্রক্রিয়ায় এ কমিটি গঠন করেছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্যবসায়ীদের একাংশের সমর্থনে নির্বাচিত সভাপতি নজরুল ইসলাম জিতু বলেন, ৫ আগষ্টের পর বাজারটি এক প্রকার অরক্ষিত। তাই এত বড় বাজারের দায়িত্ব একা সামলানো সম্ভব নয় বিধায় মঙ্গলবার বিকেলে বাজারের ব্যবসায়ীদের পরামর্শে একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই কমিটি একটি কার্যকরী কমিটি গঠন করে এবং একটি উপকমিটি গঠন করে নির্বাচন প্রস্তুতি প্রক্রিয় সম্পন্ন করে ভোটের মাধ্যমে নতুন কমিটি গঠন করে নির্বাচিত কমিটিকে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হবে। এছাড়া তাদের আনিত অভিযোগগুলো সত্য নয়।