নিজস্ব প্রতিবেদক, মোঃ সাইফুল আলম – আখাউড়া ডট কম
সম্ভাবনার নতুন দ্বার উন্মোচন হবে আখাউড়ার, আশুগঞ্জের তথা ব্রাহ্মণবাড়িয়ার। তিতাস নদীর কোল ঘেঁষা জেলা শহরে আসবে নতুন দিগন্ত। বলছিলাম আখাউড়া-আশুগঞ্জ চার লেন প্রকল্পের কথা। সকল দ্বিধা কাটিয়ে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে আখাউড়া-আশুগঞ্জ চার লেন প্রকল্পের কাজ।
মূল প্রকল্পের নাম আশুগঞ্জ নদীবন্দর-সরাইল-ধরখার-আখাউড়া স্থলবন্দর মহাসড়ককে ৪-লেন জাতীয় মহাসড়কে উন্নীতকরন প্রকল্প। প্রকল্পটির মূল অবস্থান ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আশুগঞ্জ, সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর, কসবা এবং আখাউড়া। সত্যিকার অর্থে এই প্রকল্পটি শেষ হলে কলকাতাসহ ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় সাত রাজ্যের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। পাশাপাশি আন্তঃদেশীয় যোগাযোগের ক্ষেত্রেও আসবে ব্যাপক পরিবর্তন।
বাংলাদেশ-ভারত যৌথ অর্থায়নে আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত এ চারলেন প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। যা বাস্তবায়নে রয়েছে বাংলাদেশের সড়ক ও জনপদ অধিদপ্তর। মূল প্রকল্পের দৈর্ঘ্য ৫০.৫৮ কিলোমিটার। এই প্রকল্প উন্নীত হলে এইসব এলাকার সার্বিক আর্থ-সামাজিক দ্বার উন্মোচিত হবে।
আশুগঞ্জ-আখাউড়া চার লেন মহাসড়ক নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ৫৬৭ কোটি ৮৫ লাখ টাকা। প্রকল্পটি ২০১৭ সালের ২০ জুন জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটি (একনেক) অনুমোদন দেয়। প্রাথমিকভাবে প্রকল্পের কাজ শেষ করার সময়সীমা ধরা হয়েছিল ২০২১ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত। প্রকল্পের নকশা ও আশুগঞ্জ নদীবন্দর টার্মিনালের নকশা চূড়ান্ত হয়েছে। তবে এখন পর্যন্ত প্রকল্পের জমি অধিগ্রহণের কাজ পুরোপুরি শেষ হয়নি। এখন পর্যন্ত ১০৭ দশমিক ৫০ হেক্টর জমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
৫০ কিলোমিটারের বেশি দৈর্ঘ্যের এই প্রকল্পে ১টি ফ্লাইওভার, ১৬টি ব্রিজ, ২টি রেলওয়ে ওভারপাস, ৩টি আন্ডারপাস, ১০টি ফুটওভার ব্রিজ, ৩৬টি বক্স কালভার্ট ও তিন কিলোমিটার নতুন বাইপাস সড়ক রয়েছে। ২০২৪ সালে প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা।
২০১৯ সালের মাঝামাঝি সময়ে শুরু হয় বাংলাদেশ-ভারত যৌথ অর্থায়নে আশুগঞ্জ থেকে আখাউড়া পর্যন্ত এ চারলেন প্রকল্পের কাজ। মাঝপথে মহামারি করোনা ছাড়াও ভূমি অধিগ্রহণ, লোকবল ও যন্ত্রপাতি ভারত থেকে আনতে সমস্যা হওয়ায় কাজ কয়েক দফা থেমে যায়। তবে চলতি বছর সমস্যাগুলো কেটে যাওয়ায় করোনার মধ্যেও কাজ চলছে পুরোদমে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, প্রকল্পটি শেষ হলে দুই দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারের পাশাপাশি যোগাযোগে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হবে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের পরিচালক মো. শাহ আলম বলেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে ব্যবসায় ব্যাপক প্রসার ঘটবে। আশুগঞ্জ-আখাউড়া চারলেন প্রকল্পের উপপ্রকল্প ব্যবস্থাপক শামীম আহমেদ বলেন, প্রকল্পটি দুই দেশের অর্থনীতিতে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। সার্বিক অগ্রগতি হচ্ছে ২৪ পারসেন্ট। শুধু ভারত-বাংলাদেশ না এটা অন্যান্য পাশের দেশগুলো আছে তাদের সঙ্গেও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি পাবে।
জেলা প্রশাসক হায়াত-উদ-দৌলা খান জানান, ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক সম্ভাবনা বাড়বে। পাশাপাশি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগও অনেক সহজ হবে।