আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজারের শ্রমিক-কর্মচারীদের বিক্ষোভ, দাবিতেএকই পে স্কেল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার ও কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডের (এএফসিসিএল) শ্রমিক-কর্মচারীরা ‘এক করপোরেশন, এক পে স্কেল’ বাস্তবায়ন ও নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস সরবরাহের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন।

আজ রোববার সকাল সাড়ে ৮টা থেকে ১০টা পর্যন্ত এএফসিসিএলের প্রধান ফটকের সামনে এই কর্মসূচি পালিত হয়। একই দাবিতে শ্রমিক-কর্মচারীরা এএফসিসিএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মাধ্যমে শিল্প উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন।

এএফসিসিএলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের ব্যানারে কর্মীরা আশুগঞ্জ সার কারখানার ভেতর থেকে প্রধান ফটকের সামনে এসে বিক্ষোভ সমাবেশে অংশ নেন। শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি বজলুর রশিদের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য রাখেন সাধারণ সম্পাদক আবু কাউসার, জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আক্তার হোসেন ও সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ।

বক্তারা বলেন, একই কারখানার শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য দুটি বেতন কাঠামো চালু থাকায় বৈষম্যের সৃষ্টি হয়েছে। শুধু টেকনিশিয়ান ও অপারেটরদের মজুরি স্কেলে রাখা হয়েছে, বাকি সবাই জাতীয় পে স্কেলে আছেন। কারখানার উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণ শ্রমিকদের ওপর নির্ভর করে। তাঁদের সঙ্গে এমন বৈষম্য সহ্য করা যায় না। তাই জাতীয় মজুরি কমিশনের আওতাভুক্ত শ্রমিকদের জন্য ১৫ শতাংশ বিশেষ প্রণোদনা দ্রুত বাস্তবায়নের পাশাপাশি টেকনিশিয়ান ও অপারেটরদেরও জাতীয় পে স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানানো হয়।

তাঁরা আরও বলেন, চলতি বছরের ১ মার্চ থেকে ১৬২ দিন ধরে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকায় আশুগঞ্জ সার কারখানার উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এতে প্রতিদিন প্রায় ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে, যার মূল্য প্রায় ৮০০ কোটি টাকা। বিদেশ থেকে উচ্চমূল্যে সার আমদানি বন্ধ করতে হবে। গ্যাস সরবরাহ নিশ্চিত করে ইউরিয়া উৎপাদন পুনরায় চালুরও দাবি জানান শ্রমিক-কর্মচারীরা।

সমাবেশ শেষে শ্রমিকেরা কারখানার ভেতরে বিক্ষোভ মিছিল করেন এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালকের মাধ্যমে শিল্প উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দেন।

এএফসিসিএলের শ্রমিক-কর্মচারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক আবু কাউসার বলেন, আশুগঞ্জ ফার্টিলাইজার ও কেমিক্যাল কোম্পানি লিমিটেডে মোট ৭০২ জন শ্রমিক-কর্মচারী ও কর্মকর্তা রয়েছেন, যার মধ্যে ৪৫২ জন জাতীয় বেতন কমিশনের আওতাভুক্ত, বাকি ২৫০ জন জাতীয় মজুরি কমিশনের আওতাভুক্ত। অপারেটর ও টেকনিশিয়ানদের মজুরি কমিশনে থাকতে বাধ্য করা হলেও ড্রাইভার, মালি পর্যন্ত জাতীয় বেতন কমিশনের সুবিধা পাচ্ছেন। বিসিআইসির প্রতিষ্ঠানগুলো কৃষিনির্ভর বাংলাদেশের খাদ্যনিরাপত্তা ও জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখলেও একই করপোরেশনের শ্রমিকদের বেতন কাঠামোতে বিভাজন রয়েছে। ফলে পদোন্নতি ও অন্যান্য সুবিধায় বৈষম্যের শিকার হচ্ছেন মজুরি কমিশনের আওতাভুক্ত শ্রমিকেরা।

আবু কাউসার বলেন, জাতীয় মজুরি কমিশন থেকে জাতীয় বেতন কমিশনে স্থানান্তর করলে করপোরেশনের অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে না। বিসিআইসির অধীন সব টেকনিশিয়ান ও অপারেটরদের জাতীয় বেতন স্কেলে অন্তর্ভুক্ত করে ‘এক করপোরেশন এক পে স্কেল’ কার্যকর করার জন্য বিসিআইসির পরিচালনা পর্ষদ ও মন্ত্রণালয়কে নির্দিষ্ট সময়সীমা ও রূপরেখা প্রণয়ন করতে হবে।

Related Posts

About The Author