অতিউৎসাহী বিএনপি নেতার ভূমিকায় চাকসুতে ছাত্রদলের ভরাডুবি

ডাকসু, জাকসুর পর এবার চাকসুতেও ভরাডুবি হয়েছে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের। ২৬পদের ২৫ পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাই করতে পারেনি তারা। এমন ভরাডুবির পর নানান কারণ নিয়ে আলোচনা চলছে সর্বত্র। সবচেয়ে বেশি সরগরম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম। বিএনপিপন্থি পেশাজীবী নেতা থেকে শাখা ছাত্রদলের একাধিক সাবেক নেতা সাংগঠনিক দুর্বলতা আর প্যানেল বাছায় প্রক্রিয়ার সমালোচনা করে পোস্ট দিয়েছেন। প্রায় সবাই দায়ী করেছেন বিএনপির হাটহাজারী এলাকার এক কেন্দ্রীয় নেতাকে।

ত্যাগী ও পরিচিত নেতাদের বাদ দিয়ে অনেকটা একক সিদ্ধান্তে প্যানেল গঠন করেছিলেন তিনি। নির্বাচনের দিন সকাল থেকে ছাত্রদল নেতাকর্মীদের বিভিন্ন অভিযোগ দেয়া এমনকি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, নির্বাচন কমিশন ও ভোটারদের ওপর চড়াও হতেও উসকানি দিয়েছেন তিনি। তার উস্কানিতেই ক্যাম্পাসের বাইরে জমায়েত ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসব ঘটনা ওই নেতা তার ফেসবুক পেইজে আবার শেয়ারও করেছেন। দায় চাপিয়েছেন প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীদের ওপর। এসব কারণে ক্যাম্পাসে ও ক্যাম্পাসের বাইরে উত্তেজনা ছড়িয়েছে বুধবার দুপুর থেকে গভির রাত পর্যন্ত। । যার দায় সয়ংক্রিয়ভাবে ছাত্রদলের ওপর পড়েছে। এতে নির্বাচনের দিন নেতিবাচক ধারণা তৈরি হয় সাধারণ ভোটারদের মধ্যে।

হাটহাজারীর বাসিন্দা বিএনপির এক কেন্দ্রীয় নেতা প্রভাবে প্যানেল গঠন করে কেন্দ্রীয় ছাত্রদল। অভিযোগ রয়েছে এতে বাদ দিয়ে দেয়া হয় দীর্ঘদিন ধরে চাকসু নির্বাচনের প্রস্তুতি নেয়া ত্যাগী নেতাদের। এমনই ওই পক্ষের কোনো নেতাকে নির্বাচন পরিচালনা কমিটিতেও রাখা হয়নি। বিপরীতে শিক্ষার্থীদের কাছে অপরিচিত একটি প্যানেলকে ভোটের মাঠে পাঠায় ছাত্রদল। এতেই ভরাডুবি ঘটে প্রায় পূর্ণ প্যানেলের। প্রার্থীরা সবাই ক্লিন ইমেজের হলেও ভোটারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ না থাকায় নির্বাচনী দৌড়ে পেরে ওঠেনি ছাত্রদল। ভোটের এক দিন আগে বহিস্কার করা হয় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সহ-সভাপতি মামুনুর রশিদকে। এই ঘটনায় ক্ষুব্ধ হয় ছাত্রদলের এক পক্ষ।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক এক সাধারণ সম্পাদক জানান, ছাত্রদল নিজেদের মতো করে প্যানেল গঠন করেছে। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতিতে মহানগর আর উত্তর জেলা বিএনপির একটি প্রভাব রয়েছে। নির্বাচনের আগে নগর ও জেলা গ্রুপিং মিমাংশা না করেই ভোটের মাঠে পাঠানো হয়েছে প্রার্থীদের। ফলে কয়েক ভাগে বিভক্ত ছাত্রদলের একাধিক পক্ষ নির্বাচনী প্রচারণায় ইতিবাচকভাবে অংশগ্রহণ করেনি।

এছাড়া শিবিরের রাজনৈতিক কৌশলের কাছেও মার খেয়েছে ছাত্রদল। গত ১৬ বছর শিবিরের কর্মীরা নানান ছদ্মবেশে ক্যম্পাসে অবস্থান করে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিশে ছিলো। বিপরীতে ছাত্রদল নেতারা কেউ ক্যাম্পাসে ঢুকতেই পারেনি। ফলে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিবিরের প্রার্থীদের পরিচিতি একটু বেশি ছিলো। এটিও ভোটের মাঠে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।

Related Posts

About The Author