ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গভীর রাতে জেগে উঠে ছয় মাস বয়সী শিশু নুসরাত জাহান কান্নাকাটি শুরু করে। এতে বিরক্ত হয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ পানিতে ফেলে দেন মা। হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে শিশুর মা–বাবা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. জালাল উদ্দিন জবানবন্দি রেকর্ড করেন।
জবানবন্দি দেওয়া দুজন হলেন স্বপ্না বেগম (৪০) ও তাঁর স্বামী জিল্লুর রহমান (৫৯)। তাঁরা সদর উপজেলার বাসুদেব ইউনিয়নের বরিশাল গ্রামের বাসিন্দা। গত ৩০ জুন রাতে এ ঘটনা ঘটে। সোমবার রাত আটটার দিকে বাড়ির পাশের একটি খাল থেকে ওই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। ময়নাতদন্তের জন্য তার লাশ মঙ্গলবার জেলা সদর হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসলাম হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, সোমবার দুপুরে ওই শিশুর মা–বাবা থানায় এসে নিখোঁজের কথা বলে একটি সাধারণ ডায়েরি করেন। সেখানে উল্লেখ করেন, ৩০ জুন রাতে কে বা কারা কৌশলে বাড়ির দরজা খুলে তাদের শিশু সন্তান নুসরাতকে নিয়ে গেছে। এর পর থেকে তাঁকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। তাঁরা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন কথা বলছিলেন। একবার বলছিলেন জিন ও ভূত এসে তাঁদের সন্তানকে নিয়ে গেছে। সোমবার রাতে বাড়ির পাশের একটি খালে শিশুর লাশ ভেসে ওঠে। কিন্তু বিষয়টি নিয়ে মা–বাবার মধ্যে কোনো অনুশোচনা ছিল না।
জবানবন্দির বরাত দিয়ে মো. আসলাম হোসেন জানান, গত ৩০ জুন রাতে বিছানার মধ্যে শিশু নুসরাত, একপাশে শিশুর মা স্বপ্না ও বোন তায়েবা আক্তার শুয়ে ছিল। পাশের কক্ষে শিশুর বাবা ঘুমিয়ে ছিলেন। রাত একটার দিকে শিশু নুসরাত জেগে উঠে কান্নাকাটি শুরু করে। সে সময় কাপড় দিয়ে মুখ চেপে ধরে শিশুর শ্বাস রোধ করে হত্যা করেন মা। কিছুক্ষণ পর পাশের ঘর থেকে বাবা এগিয়ে আসেন। স্বপ্না শিশু নুসরাতকে খালে ফেলে দিয়ে আসতে বলেন স্বামীকে। স্বপ্নার কথামতো মেয়ের লাশ ফেলে দেন বাবা।