ফ্ল্যাট-বাড়ি থাকলেও গোপন করে প্লট বরাদ্দ নেয় রেহানা-ববি-আজমিনা

ঢাকা শহরে ফ্ল্যাট-বাড়ি থাকা সত্ত্বেও অবৈধভাবে রাজউকের পূর্বাচলে পৃথক তিনটি প্লট বরাদ্দ নেয় রেহানা-ববি ও আজমিনা। এই তিন জনের জব্দ করা আয়কর নথিতে প্রমাণ মেলিছে তাদের নামে রাজধানীতে ফ্ল্যাট-বাড়ি থাকা সত্ত্বেও রাজউকের প্লট বরাদ্দ নিতে গিয়ে হলফনামা দিয়ে সেটি গোপন করেছেন। এসব প্লট বরাদ্দ পেতে ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকির প্রভাবখাটান তারা।বৃহস্পতিবার ঢাকার বিশেষ জজ-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলমের আদালতে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের পাঁচ কর্মকর্তার জব্দ করা নথিতে এসব প্রমাণ পাওয়া গেছে।

এদিকে এসব মামলায় পলাতাক আসামি শেখ হাসিনার পক্ষে আইনী লড়াই করতে আবেদেন করেন চার আইনজীবী। তবে দেশের বিদ্যমান আইনে পলাতক আসামির পক্ষে আইনজীবী নিয়োগের সুযোগ না থাকায় আবেদনটি বাতিল করেন আদালত। এ তিন মামলায় আগামি ২১ সেপ্টেম্বর পরবর্তী সাক্ষ্যগ্রহণের শুনানির দিন ধার্য করেছেন আদালত।

আজ রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে ক্ষমতাচ্যুত সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার বোন শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তীসহ অন্য আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলায় তৃতীয় দিনে জব্দতালিকার পাঁচ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেছেন আদালত। সাক্ষীরা হলেন, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের অফিস সহকারী দেলোয়ার হোসেন ও শফিকুল ইসলাম। এরপর একে একে সাক্ষ্য দেয় জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কর সার্কেল প্রধান সহকারী মোহাম্মদ লুৎফর রহমান, কর সার্কেলের কম্পিউটার অপারেটর মো. রেজাউল হক ও কর সার্কেল নোটিশ সার্ভার মো. আবু তাহের।

দুদক পাবলিক প্রসিকিউটর মীর আহমেদ আলী সালাম এতথ্য নিশ্চিত করেন।

গত ৩১ জুলাই এসব মামলায় চার্জগঠন করে বিচার শুরু আদেশ দেন আদালত। চার্জগঠন শুনানির সময়ে আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পৃথক তিন মামলায় শেখ রেহানা, টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, শেখ হাসিনাসহ ১৭ জন, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, শেখ হাসিনাসহ ১৮ এবং রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, শেখ হাসিনাসহ ১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।

মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছে, শেখ রেহানার ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।

প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়।

Related Posts

About The Author