আখাউড়া-আগরতলার সীমান্ত দিয়ে আজ বৃহস্পতিবার দুই দেশের ৫১ জন যাত্রী নিজ নিজ দেশে ফিরেছেন। এর মধ্যে ৭ জন ভারতীয় এবং ৪৪ জন বাংলাদেশি। তবে এই হিসাব সকাল থেকে বিকেল পৌনে ছয়টা পর্যন্ত সময়ের। এই নিয়ে এই সীমান্ত দিয়ে গত ১০ দিনে দুই দেশে আটকা পড়া ৩২১ জন নাগরিক যাতায়াত করেছেন বলে জানা গেছে।
আখাউড়া স্থলবন্দরের ইমিগ্রেশন সূত্র জানিয়েছে, যাতায়াত করা এই যাত্রীদের সবার করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ ফল, উভয় দেশে নিযুক্ত হাইকমিশনারে অনুমতি ও অনাপত্তিপত্র এবং করোনার টিকার প্রথম বা দ্বিতীয় ডোজ নেওয়ার প্রমাণপত্র দেখাতে হয়েছে।
আখাউড়া ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ এপ্রিল থেকে আজ ৬ মে পর্যন্ত ১০ দিনে ভারতীয় হাইকমিশন, বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের পাঠানো তালিকার ৬৩ জনের মধ্যে ৬৩ জনসহ সর্বমোট ৯৭ জন ভারতীয় নিজ দেশে ফিরে গেছেন। একই সময়ে ভারতে আটকা পড়া ২১৪ জন বাংলাদেশি নিজ দেশে ফিরে এসেছেন। বর্তমানে আখাউড়ায় প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে আছেন ৫৬ জন। আখাউড়া ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ আবদুল হামিদ প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ইমিগ্রেশন সূত্রে আরও জানা গেছে, যেসব বাংলাদেশি গত ২৭ এপ্রিল থেকে দেশে আসা শুরু করেছেন, তাঁদের আখাউড়ার প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে পাঠানো হচ্ছে। অনেক দিন ধরেই আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে সাধারণ যাত্রীদের আসা-যাওয়া বন্ধ রয়েছে। তবে বাংলাদেশে এসে আটকা পড়া ভারতীয় এবং বাংলাদেশ থেকে চিকিৎসার জন্য ভারতের বিভিন্ন স্থানে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা আখাউড়া-আগরতলা সীমান্ত দিয়ে আসা-যাওয়া করতে পারছেন। সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার এবং ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশ হাইকমিশনারের অনুমতি লাগবে, যাকে এনওসি অর্থাৎ অনাপত্তিপত্র বলা হচ্ছে।
এখন পর্যন্ত যে ৯৭ জন ভারতীয় নিজ দেশে ফিরে গেছেন। তাঁদের মধ্যে গত ২৭ এপ্রিল ১৮ জন, ২৮ এপ্রিল ৯ জন, ২৯ এপ্রিল ৭ জন, ৩০ এপ্রিল ১৬ জন, ১ মে ১০ জন, ২ মে ৭ জন, ৩ মে ৮ জন, ৪ মে ৭ জন, ৫ মে ৮ জন এবং আজ ৬ মে বিকেল পৌনে ৬টা পর্যন্ত ৭ জন ভারতীয় নিজে দেশে ফিরে গেছেন। অর্থাৎ এপ্রিল মাসের শেষ ৪ দিনে ৫০ জন ও গত ৫ দিনে ৪৭ জন ভারতীয় নিজ দেশে ফিরে গেছেন।
অপর দিকে, ভারতে আটকা পড়া বাংলাদেশিদের মধ্যে গত ২৭ এপ্রিল ৬ জন, ২৮ এপ্রিল ১৮ জন, ২৯ এপ্রিল ১৪ জন, ৩০ এপ্রিল ১১ জন, ১ মে ১৩ জন, ২ মে ৮ জন, ৩ মে ৩১ জন, ৪ মে ১৫ জন, ৫ মে ৬০ জন এবং আজ ৬ মে বিকেল পৌনে ৬টা পর্যন্ত ৪৪ জন বাংলাদেশি নিজে দেশে ফিরেছেন।
আখাউড়া ইমিগ্রেশনে হেলথে ডেস্কে বসা চিকিৎসক ফারহানা আক্তার বলেন, ‘ভারত থেকে আসা বাংলাদেশিদের দুটি বিষয় আমরা দেখি। একটি, সর্বশেষ ৭২ ঘণ্টার মধ্যে করা অ্যান্টিজেন বা আরটি-পিসিআরে করা করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ ফলাফল। তবে আমরা আরটি-পিসিআরের ফলাফলকে গুরুত্ব দিই বেশি। যাঁদের করোনা নেগেটিভ সনদ আছে এবং যাঁরা করোনার টিকার দুটি ডোজ নিয়েছেন, তাঁদের ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। আর যাঁরা করোনার টিকার একটি ডোজ বা কোনো ডোজ নেননি তাঁদের তিন দিনের বাধ্যতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টিনে থাকতে নির্দেশনা দেয় উপজেলা প্রশাসন। পরে করোনার নেগেটিভ ফলাফল আসলে তাঁদের ১১ দিনের বাধ্যতামূলক হোম কোয়ারেন্টিনে থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়। খবর: প্রথম আলো