নিজস্ব প্রতিবেদক, মোঃ সাইফুল আলম – আখাউড়া ডট কম
দিন দিন আখাউড়ায় বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। অনেক কারনেই শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। তবে এই মুহূর্তে সবচেয়ে বেশী যে কারনে বাড়ছে তা হল ঠান্ডাজনিত কারণ। সব এলাকার সাথে পাল্লা দিয়ে আখাউড়াতেও বেড়েই চলেছে শিশু রোগীর সংখ্যা।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ঠান্ডাজনিত কারণে শিশু রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত কয়েক দিনে কাশি, নিউমোনিয়া, শ্বাসকষ্ট, জ্বর ও ভাইরাসজনিত কারণে শিশু ওয়ার্ডে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে দেড় শতাধিক রোগী। এর মধ্যে গতকাল বৃহস্পতিবারও ঠান্ডাজনিত কারণে ভর্তি হয় ১৫ জন শিশু। যার মধ্যে বেশির ভাগই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুদের রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়েছে। এ সময় অভিভাবকদের সতর্ক থাকার ও পরামর্শ দেন চিকিৎসকেরা।
উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে চলতি মাসের ১ তারিখ থেকে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত হাসপাতালে দেড় শতাধিক শিশু ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিয়েছে। একই সঙ্গে আন্তবিভাগ ছাড়া বহির্বিভাগেও ঠান্ডাজনিত সমস্যা নিয়ে রোগী আসছে। যার মধ্যে বেশির ভাগই ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।
উপজেলার মোগড়া ইউনিয়নের গঙ্গাসাগর এলাকার ১০ মাস বয়সী ছেলে নুর মোহাম্মদকে ডায়রিয়াজনিত রোগ নিয়ে মা বিলকিস হাসপাতালে ভর্তি হন। তিনি জানান, ছেলের ডায়রিয়া হয়েছে। উন্নত চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে ভর্তি আছেন দুই দিন ধরে।
মনিয়ন্দ ইউনিয়নের বড় লৌঘর গ্রামের মতালিম জানান, ছেলে শান্তকে নিয়ে তিন দিন ধরে হাসপাতালে ভর্তি। ডাক্তার বলছেন ছেলের ডায়রিয়া হয়েছে। পৌরসভার রাধানগর এলাকার ১৯ মাস বয়সী ছেলে আয়াতেরও একই সমস্যা। হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন দুই দিন ধরে।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সিনিয়র নার্স স্টাফ সানজিদা মাহমুদ জানান, বেশ কয়েক দিন ধরে হাসপাতালে শিশু ও মেডিসিন ওয়ার্ডে রোগী বেড়েছে। প্রতিদিনই ছাড়পত্রের তুলনায় নতুন ভর্তি রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। অতিরিক্ত রোগীর চাপে কষ্ট হলেও চিকিৎসক-নার্সরা তাঁদের সর্বোচ্চ সেবা দিয়ে আসছেন। শীতকালে শিশু ও বৃদ্ধদের একটু বেশি যত্নের প্রয়োজন হয়। শ্বাসকষ্টজনিত রোগ এড়াতে ঠান্ডার পাশাপাশি সবাইকে ধুলাবালু এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন তিনি।
আরও পড়ুনঃ বিজয়নগরে প্লাষ্টিক ও পলিথিন ব্যবহারের ক্ষতিকারক প্রভাব শীর্ষক এআরডি’র সেমিনার অনুষ্ঠিত
আখাউড়ার আনোয়ারপুর থেকে আসা একটি শিশুর মা নাজমা বেগম বলেন, হাসপাতালে কোনো ওষুধ নেই। বাইরে থেকে নিয়ে আসতে হয় ওষুধ। এতে একটু অসুবিধা হলেও কিছুই করার নেই।
আখাউড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডিপ্লোমা ইন মেডিকেল ফ্যাকাল্টি (ডিএমএফ) সুধাংশ চৌধুরী বলেন, ‘হাসপাতালে শীতজনিত রোগে শিশু রোগীর চাপ একটু বেশি। পর্যাপ্ত চিকিৎসাসেবা দিয়ে যাচ্ছি। গত মাসের তুলনায় এই মাসের শুরুতে শিশুর রোগীর চাপ বেড়েছে।’
এ ব্যাপারে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদুর রহমান জানান, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে শিশুদের শীতজনিত রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। অভিভাবকদের একটু বেশি সতর্ক থাকবে হবে। শিশুদের যাতে ঠান্ডা বাতাস না লাগে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে।