আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমালোচনা উপেক্ষা করে আবারও অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভকারীদের ওপর গুলি চালিয়েছে মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনী। বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) নতুন করে গুলি ছোড়ার ঘটনায় সাতজন নিহত হয়েছেন। এর মধ্যে ছয়জন মায়িং শহরে এবং অপরজন ইয়াঙ্গুনে গুলিবিদ্ধ হন। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্সের প্রতিবেদন এসব তথ্য জানা গেছে।
গত ১ ফেব্রুয়ারি সেনা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে অং সান সু চির নির্বাচিত সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে মিয়ানমারে রাজনৈতিক সংকট শুরু হয়। অভ্যুত্থানের পর গ্রেফতার করা হয়েছে সু চিসহ তার দল ন্যাশনাল লিগ ফর ডেমোক্র্যাসির (এনএলডি) শীর্ষ নেতাদের। সেনাবাহিনীর অভিযোগ,গত নভেম্বর মাসে অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতি করে জয় পেয়েছে এনএলডি। তবে এই অভিযোগ নাকচ করে দিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। দেশটিতে বর্তমানে জান্তা শাসকদের বিরুদ্ধে টানা বিক্ষোভ চলছে। বিক্ষোভকারীদের ঠেকাতে নির্বিচারে গুলি চালাচ্ছে নিরাপত্তা বাহিনী। তবে তাতে দমছেন না আন্দোলনকারীরা।
ধরপাকড় সত্ত্বেও বৃহস্পতিবার দেশটির বিভিন্ন শহরে জান্তাবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে। এদিন মায়িং ও ইয়াঙ্গুনের বিক্ষোভে এলোপাতাড়ি গুলি চালিয়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। মায়িং শহরের এক আন্দোলনকারী বলেন,‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলাম। বিশ্বাসই করতে পারছি না যে,তারা এমনটা করতে পারে।’
বৃহস্পতিবারের বিক্ষোভে নিহতের ঘটনার আগে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা অ্যাসিস্ট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানায়,অভ্যুত্থানের পর থেকে মিয়ানমারজুড়ে বিক্ষোভে সহিংসতার ঘটনায় ৬০ জনের বেশি মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। আটক করা হয়েছে অন্তত দুই হাজার জনকে।
অভ্যুত্থানবিরোধী শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী প্রাণঘাতী কৌশল এবং যুদ্ধক্ষেত্রে ব্যবহৃত অস্ত্র প্রয়োগ করছে বলে অভিযোগ করেছে মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। গত কয়েক সপ্তাহের ভিডিও এবং ছবির প্রমাণ বিশ্লেষণ করে বৃহস্পতিবার লন্ডনভিত্তিক সংস্থাটি বলেছে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী হত্যার নেশায় মত্ত হয়ে উঠেছে। দেশটির সহিংসতা থামাতে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ এবং আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতিও আহ্বান জানিয়েছে তারা।