ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় সংকেত অমান্য করে লেবেল ক্রসিং গেট অতিক্রম করার সময় মালবাহী ট্রেনের ধাক্কায় মোটরসাইকেলের তিন আরোহী আহত হয়েছেন। এ ঘটনায় স্থানীয় লোকজন ট্রেনের চালক ও সহকারী চালককে মারধর করেছেন। শনিবার বেলা তিনটার দিকে শহরের জেলা পরিষদসংলগ্ন লেবেল ক্রসিং গেট এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। লেবেল ক্রসিং গেটে কোনো গেটম্যান ছিলেন না।
স্থানীয় ব্যক্তিদের ভাষ্য, মালবাহী ট্রেন শহরের জেলা পরিষদ রেলক্রসিং গেট অতিক্রম করার সময় রেলগেট পড়েনি। যে কারণে মোটরসাইকেল আরোহীরা ট্রেন আসার বিষয়টি টের পাননি। এতে ট্রেনের ধাক্কায় তিন মোটরসাইকেল আরোহী ছিটকে পড়েন। আহত হয়েছেন রাতুল (২০), আরাফাত (২২) ও অজ্ঞাতনামা আরেক আরোহী (১৮)।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের ভাষ্য, গেইটম্যান বাঁশি বাজিয়েছেন। কিন্তু সংকেত অমান্য করে ২০-২৫টি মোটরসাইকেল রেলক্রসিং গেইট অতিক্রম করে। সে সময় ট্রেনের ধাক্কায় কয়েকজন মোটরসাইকেল আরোহী আহত হন।
স্থানীয় লোকজন, প্রত্যক্ষদর্শী, রেলস্টেশন ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় লোকজন ও অন্য মোটরসাইকেল আরোহীরা উত্তেজিত হয়ে মালবাহী ট্রেনের চালক আনোয়ার হোসেন (৪৫) ও সহকারী চালক জসিম উদ্দিনকে (৪০) মারধর করেন। খবর পেয়ে রেলস্টেশনের পুলিশ ফাঁড়ি ও সদর থানা–পুলিশের সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। আহত মোটরসাইকেল আরোহী এবং ট্রেনের চালক ও সহকারী চালককে উদ্ধার করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়।
মালবাহী ট্রেনের চালক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘লেবেল ক্রসিং গেট অতিক্রম করার সময় ইঞ্জিনের সামনে মোটরসাইকেল আটকে থাকতে দেখে প্রাণপন চেষ্টা করে ট্রেন থামিয়েছি। এ সময় উত্তেজিত লোকজন এসে আমাদের ওপর হামলা চালায়। তারা মারধর শুরু করলে পাশের এলাকার লোকজন এগিয়ে এসে আমাদের উদ্ধার করে।’
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের মাস্টার শোয়েব আহমেদ প্রথম আলোকে বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ৬০২ নম্বর কনটেইনার ট্রেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কলেজপাড়ার রেলগেট এলাকা অতিক্রম করে। সে সময় সংকেত অমান্য ২০ থেকে ২৫টি মোটরসাইকেল লেবেল ক্রসিং গেট অতিক্রম করে। একটি মোটরসাইকেল ট্রেনের ইঞ্জিনের সঙ্গে ধাক্কা লেগে ছিটকে পড়ে। পরে লোকজন ট্রেনের লোকো মাস্টার (চালক) ও সহকারী চালককে মারধর করেন। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম ও ঢাকা-সিলেট ডাউন লাইনে ট্রেন চালচলে বিঘ্ন ঘটে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলস্টেশনের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক (এসআই) সালাউদ্দিন খান প্রথম আলোকে বলেন, গত ২৬ মার্চের সহিংসতায় ব্রাহ্মণবাড়িয়া রেলওয়ে স্টেশনের সিগনালিং ব্যবস্থা অকেজো হয়ে পড়েছে। মালবাহী একটি ট্রেন শহরের রেলগেট এলাকা ধীরগতিতে অতিক্রম করার সময় একটি মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এরপর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।