ছোট্ট সুন্দর একটা শহর, আটলান্টিক মহাসাগরের পারে ।
দূর সাগরের হিমেল হাওয়া প্রতিদিন ভোরে এই শহরকে শুভেচ্ছা জানায় । এই শহরের নাম হ্যালিফ্যাক্স। আটলান্টিক কানাডার সবচেয়ে বড় আর জনবহুল শহর হ্যালিফ্যাক্স নোভা স্কশিয়া প্রদেশের রাজধানী। এই শহরে আমার বসবাস।
একদিন সন্ধ্যায় টার্মিনালে বাসের অপেক্ষায় বসেছিলাম। বাইরে তখর প্রচন্ড শীত। এমন সময় এক বৃদ্ধা লাঠিতে ভর করে পাশে এসে দাঁড়ালেন। বয়স ৭০ এর বেশী হবে। বোঝাই যাচ্ছে তিনি অনেক কষ্টে হেঁটে এসেছেন। আমি আমার আসন ছেড়ে তাঁকে বসতে দিলাম । বুড়ি আমাকে অনেক শুভ কামনা করে বসে পড়লেন।
তারপর ভুমিকাহীনভাবে তার সন্তাদের কথা বলা শুরু করলেন। তিনি বললেন আমাকে এক্ষুনি বাসায় ফিরতে হবে। আমার বাচ্চারা আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আমার বাচ্চারা আমাকে ছাড়া এক মুহূর্ত থাকতে পারে না।
আমি বললাম, ‘আপনি খুব ভাগ্যবান।এত সুন্দর একটা পরিবার পেয়েছেন।’
বৃদ্ধা বললেন, ‘আমি আমার বাচ্চাদের অনেক বেশি ভালোবাসি। আমার পাচঁ সন্তান, সবাই অনেক আদুরে।’
শেষ কথাটা শুনে আমার বুকের মধ্যে একটা মোচড় দিয়ে উঠল। মনে পড়ে গেল আমার বাংলাদেশে থাকা মা-বাবার কথা।
বাংলাদেশের ছোট্ট একটি গ্রামে আমার মা–বাবা থাকেন। সাথে থাকে আমর ছোট দুই বোন। সময়ের পরিবর্তনে তাদেরও বিয়ে হয়ে যাবে।তারাও আমার বাবা-মাকে ছেড়ে চলে যাবে। হয়তো এই অচেনা বৃদ্ধার মতো আমার বাবাও কোন অচেনা মানুষকে আমাদের গল্প শোনাবেন। বলবেন ‘আমার সাত ছেলে মেয়ে। অনেক আদরে তাদের আমি মানুষ করেছি। কিন্তু সময় আমাদের মাঝে পার্থক্য তৈরী করেছে।তারা্ কেউ এখন আমার কাছে থাকে না। তারা এখন আমার কাছ থেকে অনেক দূরে……..৷’
……………….সংগ্রহিত